পুরোহিতদের উপর্যুপরি প্রতিবাদের জেরে কেদারনাথ মন্দির দর্শন না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হলেন উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন চারধাম দেবস্থানম বোর্ড তৈরি করেছিলেন রাওয়াত। ত্রিবেন্দ্র সিংয়ের সেই সিদ্ধান্তে চারধামে তাঁদের ঐতিহ্যগত 'অধিকার' কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা পুরোহিতদের। সেই কারণেই এবার কেদারনাথ দর্শনে গিয়ে পুরোহিতদের প্রবল বাধার মুখে পড়েন উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কালো পাতাকা দেখানো হয় রাওয়াতকে। ত্রিবেন্দ্র সিংকে ঘিরে চলে 'গো-ব্যাক স্লোগান'। পুরোহিতদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষমেশ কেদারনাথ দর্শন না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হন উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত।
সোমবার কেদারনাথ মন্দিরে যাবেন বলে পৌঁছোন উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। হেলিপ্যাড থেকে নেমে মন্দিরের দিকেই যাচ্ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময় তাঁকে ঘিরে ধরে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন পুরোহিতরা। প্রথমে পুরোহিতদের শান্ত করার চেষ্টা করেন রাওয়াত। তবে তাতে এতটুকুও শান্ত হননি পুরোহিতরা। উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ওঠে 'গো-ব্যাক স্লোগান'। বাধ্য হয়েই ফের হেলিপ্যাডের দিকে ফিরতে শুরু করেন রাওয়াত। 'ত্রিবেন্দ্র রাওয়াত মুর্দাবাদ এবং তীর্থ-পুরোহিত একতা জিন্দাবাদ'- স্লোগান তুলতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। শেষমেশ বাধ্য হয়েই কেদারনাথ দর্শন অধরা রেখেই ফিরে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াত।
উল্লেখ্য, হিমালয়ের পাদদেশের চারটি মন্দিরের পুরোহিতরা চারধাম দেবস্থানম বোর্ডের শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতই এই বোর্ড তৈরি করেছিলেন। পুরোহিতরা মনে করেন, এই বোর্ড তৈরি করে আদতে মন্দিরের উপর থেকে পুরোহিতদের ঐতিহ্যগত 'অধিকার' কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ওই বোর্ড ভেঙে দেওয়ারও দাবি তুলেছিলেন পুরোহিতরা। উত্তরাখণ্ডের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামিও পুরোহিতদের চাপে মনোহর কান্ত ধ্যানীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছেন। সব পক্ষের কথা শুনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে ওই কমিটি। ইতিমধ্যেই ওই কমিটি এব্যাপারে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
আরও পড়ুন- ৮ নভেম্বর থেকে ফের বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করছে কেন্দ্র
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই চারধাম দেবস্থানম বোর্ডের আওতায় রয়েছে কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী এবং যমুনোত্রী-সহ রাজ্যের ৫১ টি মন্দিরের ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ-ভার। কেদারনাথ মন্দিরের পুরোহিত সন্তোষ ত্রিবেদী বলেন, “আমরা দেবস্থানম বোর্ড নিয়ে ধৈর্যের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। গত ১১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী ধামির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়। আমাদের ধৈর্য ধরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। আমরা তাঁর সেই পরামর্শ অনুসরণ করছিলাম। কিন্তু এখন আর চুপ থাকতে পারছি না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন দেবস্থানম বোর্ড ইস্যুতে আন্দোলন আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতকে মন্দির দর্শনে বাধা দেওয়া সেই আন্দোলনেরই একটি অংশ ছিল।”
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাএখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন