Advertisment

লকডাউনে আরও একগুচ্ছ বিষয় ছাড় ঘোষণা কেন্দ্রের

বর্ধিত লকডাউনের গাইডলাইন গত বুধবারই প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বেশ কিছু ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছিল সেদিন। শুক্রবার ছাড়েও তালিকায় আরও একগুচ্ছ বিষয়কে যুক্ত হল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ভারতজুড়ে ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন।

বর্ধিত লকডাউনের গাইডলাইন গত বুধবারই প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বেশ কিছু ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছিল সেদিন। শুক্রবার ছাড়েও তালিকায় আরও একগুচ্ছ বিষয়কে যুক্ত হল। তবে এইসবই দেশের সেইসব জায়গায় অনুমোদন পাবে, যেখানে আক্রান্তের হার কম।

Advertisment

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া নোটিফিকেশনে বলা হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও টেলিকমের অপটিক্যাল ফাইবার বসানোর কাজ করা যাবে। নির্মীণ কাজও ছাড়েও আওতায়। নারকেল, বাঁশ ও কোকোয়া গাছ বসানোর কাজ চলবে। আদিবাসীরা যে চাষবাস বা গাছ লাগানোর কাজ করেন, তাও করা যাবে। নন ব্যাংকিং ফিনান্স কর্পোরেশন ও মাইক্রো ফিনান্স ইনস্টিটিউটগুলি জরুরি পরিষেবার তালিকায় যুক্ত হবে। তবে ২০ তারিখ থেকে ন্যূনতম কর্মী এই সংস্থাগুলোয় কাজ করবেন।

আরও পড়ুন- লকডাউনে খোলা থাকবে হাইওয়ের ধাবা-ট্রাক মেরামতির দোকান

লকডাউনে ছাড়ের আওতা বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা। তারপরই শুক্রবার এই ছাড়ের ঘোষণা করা হয়। লকডাউনের জেরে স্তব্ধ অর্থনীতির চাকা। গরীব মানুষ কার্যত নিঃস্ব। এই অবস্থায় করোনার প্রকোপ রুখতে বাড়ানো হয়েছে ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, খাদ্যপণ্যের যোগান বজায় রাখতে ও গরীবদের হাতে অর্থ পৌঁছতে লকডাউনে কৃষিনিবিড় বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সেই ছাড়েরও আওতায় শুক্রবার আরও বেশ কয়েকটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গত বুধবার লকডাউনে যেসব ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছিল তা একনজরে-

স্বাস্থ্য ক্ষেত্র

হাসপাতাল, নার্সিং হোম, ওষুধের দোকান, মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি, প্যাথোলজি ল্যাব, ভেটারনারি হাসপাতাল, আয়ুষ হাসপাতালকে লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। যেসব সংস্থায় ওষুধ ও অন্যান্য ড্রাগ তৈরি করা হচ্ছে তাকেও লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা এবং প্রয়োজন পড়লে এক রাজ্যে থেকে অন্য রাজ্যে রোগী, ডাক্তার, নার্সদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকছে না।

কৃষি ক্ষেত্র

ফসল উৎপাদন, মান্ডি বা জেলা প্রশাসন নির্ধারিত জায়গা থেকে পাইকারী ও খুচরো কৃষি পণ্য বিক্রি, শস্যের বীজ ও কীটনাশক বিক্রি করা যাবে। সমুদ্রে বা নদী-পুকুরে মৎস চাষ, মাছ পরিবহণ, পশুপালন, দুধ, পোলট্রি, চা, কফি, রাবার চাষকে লকডাউনের মধ্যে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে, পোলট্রি, চা, কফি, রাবার চাষে সর্বাধিক ৫০ শতাংশ করে কর্মী কাজ করতে পারবেন। উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য বিক্রির জন্য মান্ডি, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। গ্রামীন এলাকায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,সেচ, মনরেগার কাজ করা যাবে।

আরও পড়ুন- একশ দিনের কাজ-কৃষি লকডাউনের আওতার বাইরে

অর্থনৈতিক ক্ষেত্র

আরবিআই, সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক, এটিএম, সেবির নির্দেশিকার মেনে শেয়ারবাজারের কাজ চলবে। এছাড়াও বিমা কোম্পানিগুলোকেও ছাড়ার আওতায় রাখা হয়েছে।

সামাজিক ক্ষেত্র

লকডাউনের আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে, শিশু, মানসিকভাবে অক্ষম, বয়স্কদের হোমকে। চলবে অঙ্গনওয়াড়ির কাজও। খোলা থাকবে পর্যবেক্ষণ হোমগুলিও। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মনরেগার কাজ হবে।

দৈনন্দিন প্রয়োজন

পেট্রল পাম্প, এলপিজি, পেট্রোলিয়াম-গ্যাস যোগান, মজুত ও সরবরাহের কাজে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ডাক বিভাগ, ইন্টারনেট, টেলিফোন পরিষেবা ছাড়েও আওতায়।

পণ্য ও পরিবহণ

জরুরি দ্রব্য নিয়ে পণ্য পরিবহনে ছাড় রয়েছে। রেল, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে ট্রাক চলাচল করতে পারবে। এক্ষেত্রে ট্রাকে দু’জন চালক ও একজন সহকারী থাকবেন।

জরুরি পরিষেবা

প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যোগানে সব ধরনের সুবিধায় ছাড় রয়েছে। দোকান, রেশন দোকান, খাবারের দোকান, মুদিখানা, ফল-সবজির দোকান,দুধ, মাছ, মাংস, বীজ, কীটনাশকের দোকান খোলা থাকবে এবং এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও সময়ের উল্লেখ নেই। রাস্তায় ভিড এড়াতে জেলা প্রশান প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি জিনিস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।

খবরের কাগজ ও বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম। কুরিয়ার পরিষেবা, কোল্ড স্টোরেজ, ওয়্যার হাউসও খোলা রাখা যাবে। সরকারি পরিশেবার সঙ্গে যুক্ত কল সেন্টার একমাত্র খোলা থাকবে। লকডাউনের ফলে আটকে পড়া পর্যটক রয়েছেন বা স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজে যুক্তরা রয়েছেন এমন সব হোটেল, লজ খোলবা থাকবে। ইলেকট্রিশিয়ান বা কলের মিস্ত্রিরা কাজে যেতে পারবেন।

আরও পড়ুন- ২০ এপ্রিল থেকে খুলছে একাধিক সরকারি দফতর, আংশিক শিথিল লকডাউন

শিল্প

প্রয়োজনীয় দ্রবের কারখানা, কয়লা, খনিজ, প্যাকজিং, পাট, ইঁটের গোলা খোলা থাকবে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি, স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোন, এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড ইউনিট, ইন্ডাসট্রিয়াল টাউনশিপগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

নির্মাণ

রাস্তা তৈরি, ইরিগেশনের কাজ, বাড়ি বানানোর সঙ্গে যুক্ত সরকারি প্রকল্পক্টগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। পুরসভার তত্ত্বাবধানে এই কাজ করা যেতে পারে।

অন্যান্য

নিরাপত্তা রক্ষী, কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, বিপর্যয় মোকাবিলা, পুলিশ ,হোমগার্ড, সিভিল ডিফেন্স, দমকল কর্মী সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের কাজ ও চলাচলে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

একনজরে কীসে কীসে ছাড় নেই

সংশোধিত গাইডলাইন অনুসারে, বিমান, ট্রেন ও সড়ক পরিবহণ পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শিল্প, বাণিজ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্র বন্ধ থাকবে। এছাড়াও বন্ধ রাখতে হবে, সিনেমা হল, শপিং মল, থিয়েটার। কোনও ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও জমায়েতও করা যাবে না। বাড়ির বাইরে বা কাজের জায়গায় মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অন্যথায় কড়া জরিমানার উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। হটস্পট এলাকা থেকে বাসিন্দাদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া বা বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাঁচ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি কর হয়েছে। থুতু ফেলা জরিমানাযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মদ, গুটখা, সিগারেটের উপরও।

Read full in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

PM Narendra Modi coronavirus Lockdown
Advertisment