গঙ্গা নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে আগেই ‘নমামী গঙ্গে’ প্রকল্পের সূচনা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার একই লক্ষ্যে সংসদে পেশ করা হবে 'জাতীয় নদী গঙ্গা (পুনরুজ্জীবন, সুরক্ষা এবং পরিচালনা) বিল ২০১৯।' জাতীয় নদীর প্রবাহমানতায় বাধা বা গঙ্গা দূষণ রুখতে এই বিলে কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে। বিলে, সর্বাধিক পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ কোটি টাকা জরিমানার প্রস্তাব রয়েছে।
সোমবার থেকে শুরু হবে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। এই অধিবেশনেই প্রস্তাবিত 'জাতীয় নদী গঙ্গা (পুনরুজ্জীবন, সুরক্ষা এবং পরিচালনা) বিল ২০১৯' পেশ করতে পারে মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই বিলের খসড়া জল শক্তি মন্ত্রকের তরফে ক্যাবিনেট অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় ঔদাসীন্যেই কি গঙ্গাপ্রাপ্তি? উঠছে প্রশ্ন
৩টি তালিকা ও ১৩টি অধ্যায় সম্বলিত এই বিলে গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও পুনরুজ্জীবনে নানা পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। রয়েছে কড়া শাস্তির বিধান। গঙ্গাকে কেন্দ্র করে বেআইনি কাঠামো নির্মাণ, জেটি নির্মাণ, নদীর প্রবাহমানতায় বাধা সৃষ্টি, পাথর ও ভূগর্ভস্থ জল তোলা, উপনদীগুলির ঘাট বা প্রবাহমানতায় বিঘ্ন ঘটালে আভিযুক্তকে নির্দিষ্ট আইনি ধারায় গ্রেফতার করা হবে। দোষী ব্যক্তি বা সংস্থার, সর্বাধিক ৫০ কোটি টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের জেল হতে পারে।
জানা গিয়েছে, নদী গর্ভে খনন, পাথর বা ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলনের মতো কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত বিলে। এক্ষেত্রে দুই বছরের জেল অথবা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। এছাড়া, গঙ্গা বা তার উপনদীর ঘাটগুলি বেআইনিভাবে বর্ধিত করলে এক বছরের জেল বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার প্রস্তাব রয়েছে 'জাতীয় নদী গঙ্গা (পুনরুজ্জীবন, সুরক্ষা এবং পরিচালনা) বিল ২০১৯'-এ।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞায় বিভ্রান্তি, প্রথা মেনেই শুরু গঙ্গায় বিসর্জন
গঙ্গা নদী কেবল সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় তাৎপর্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, দেশের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি এই নদীর উপর নির্ভরশীল। সূত্রের খবর, জাতীয় নদীর রক্ষানাবেক্ষণে বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করা হবে। প্রস্তাবিত বিলে সে কথার উল্লেখ রয়েছে। এই বহিনী আইন ভঙ্গকারীকে গ্রেফতার করে স্থানীয় থানার হাতে তুলে দেবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থেকে কাজ করবে এই বাহিনী।
প্রস্তাবিত 'জাতীয় নদী গঙ্গা' বিলে জাতীয়য় গঙ্গা কাউন্সিলের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ রয়েছে। এই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও কাউল্সিলের সদস্য থাকবেন, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা। গঙ্গা পুনরুজ্জীবনের কাজ বহুক্ষেত্রিক, বহুমাত্রিক এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট। এই কাজ সফল করতে বিভিন্ন মন্ত্রক এবং কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
Read the full story in English