জনসন টি এ
গৌরী লঙ্কেশ হত্যার দিনই সম্ভাব্য হত্যাকারীর হাতে দেশি পিস্তল তুলে দেওয়া হয়েছিল। দেরায় এমনটাই জানিয়েছে মূল সন্দেহভাজন। তার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়েছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের গোপন ইউনিটের মাথা।
২০১৭-র ৫ সেপ্টেম্বর নিজের বাড়ির বাইরে আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছিলেন গৌরী। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহ ২৬ বছরের যুবক পরশুরাম অশোক ওয়াগমারে ওরফে পরশু ওরফে কোহলি ওরফে বিল্ডারকে গত ১১ জুন গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তদল।
ওয়াগমারেকে পুলিশ হাজতে নেওয়ার আবেদনপত্র তদন্তকারী দল বলেছিল, কর্নাটকের বিজয়পুরা জেলার সিনধাগির বাসিন্দা ওয়াগমারেকে পিস্তল ও বুলেট দেওয়া হয়েছিল হত্যার দিন ও তার আগের দিন। পুলুশি জেরার মখে ধৃত ওয়াগমারে জানিয়েছে, হত্যার পর আগ্নেয়াস্ত্র এবং অবশিষ্ট বুলেট এই হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রীদের কাছে ফেরত দিয়েছিল সে।
ওয়াগমারের গ্রেফতারির পর বিশেষ তদন্তদল জানতে পারে পিস্তল ও গুলি সরবরাহ করেছিল সনাতন সংস্থার অধীনস্থ হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির প্রাক্তন আহ্বায়ক অমোল কালে।
আরও পড়ুন, Gauri Lankesh Murder: শুটার গ্রেফতার, আগেও ধরা পড়েছিল ওয়াগমারে
গৌরী হত্যার আগে ধৃত ওয়াগমারে এ ধরনের কোনও অপরাধ করেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, ৪ সেপ্টেম্বর ওয়াগমারের হাতে পিস্তল তুলে দেয় উগ্র হিন্দুবাদীরা। কিন্তু হত্যাকারী, তার সহযোগী এবং তাদের পিছনে থাকা একটি শ্যাডো ইউনিট যখন গৌরীর বাড়িতে পৌঁছেছিল, তখন তিনি বাড়িতে ঢুকে গেছেন। ফলে সেদিন ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হয়েছিল তাদের। পরদিন আবার পিস্তল তুলে দেওয়া হয় ওয়াগমারের হাতে। এদিন আর ভুল করেনি তারা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল আগে থেকেই। গৌরীর বাড়ি ফেরার সময়ে, রাত সাড়ে আটটা নাগাদ, তাঁকে গুলি করে চম্পট দেয় আততায়ীরা।
হত্যা তদন্তে নেমে বিশেষ তদন্তদল জানতে পারে প্রাক্তন হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির আহ্বায়ক, পুণের বাসিন্দা অমোল কালের কাছেই রাখা ছিল হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল। ওয়াগমারেকে শুটার বানিয়ে তোলার পিছনে অবদান ছিল তারই। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের হদিশ অবশ্য বিশেষ তদন্তদল এখনও পায়নি।
আরও পড়ুন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠী: সিআইএ
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওয়াগমারেকে গুলি চালানোর ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের বিভিন্ন জায়গায়। হত্যাকাণ্ডে যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অমোল কালেই শুটার হিসেবে ওয়াগমারেকে তৈরি করার কথা জানত। একই সঙ্গে জানা গিয়েছে কালবুর্গি, পানসারে ও দাভোলকর হত্যার মূল চক্রী ছিল এই অমোল কালেই।
অমোল কালের কাছে পাওয়া একটি ডায়েরিতে সাংকেতিক ভাষায় ওয়াগমারের নাম দেখে তার খোঁজ পায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার অমোল কালেকে আদালতে তোলা হলে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনে সে। আদালত অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।