Advertisment

স্কুল ফি না দিতে পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা, সেই ছাত্রীই রাজ্যের টপার, গর্বে চোখে জল মা-বাবার

ফি না দিতে পারায় পরীক্ষার হল টিকিট দিতে অস্বীকার করে স্কুল। অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ষোড়শী ছাত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Madhyamik Exam 2022 starts, Students have to follow Covid Protocols

আজ থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা।

পড়াশোনার খরচ জোগাতে পারেনি পরিবার। ফি না দিতে পারায় পরীক্ষার হল টিকিট দিতে অস্বীকার করে স্কুল। অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ষোড়শী ছাত্রী। সোমবার যখন পরীক্ষার ফল বেরলো, তখন সবাইকে তাক করে সেই কিশোরীই কি না রাজ্যে প্রথম। অভাবনীয় ঘটনায় কর্ণাটকে। দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে গ্রীষ্মা নায়ক।

Advertisment

দরিদ্র চাষির মেয়ে গ্রীষ্মা। বর্তমানে সে রাজ্যের টপার। তাও আবার দশমের বোর্ড পরীক্ষায়। এই আনন্দ সে কেন, তাঁর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরাও ধরে রাখতে পারছেন না। এখন তার একটাই আশা, ঈশ্বরের ইচ্ছায় যাতে ভাল কোনও কলেজে সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে সে।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পড়ুয়া জানিয়েছে, বছরের শুরুতে বোর্ড পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে সে। কিন্তু একের পর এক চরম বাধার সম্মুখীন হয় সে। ফি দিতে না পারায় অনলাইন ক্লাসে থাকতে পারত না সে। কোভিডের জন্য পরিবারের অবস্থা দুর্বিসহ হয়ে যায়। বড় দিদি কীর্তনা বাড়িতেই তাকে সাহায্য করত কঠিন বিষয়গুলিতে। পরীক্ষার তিন মাসে ভাষা বিষয়ক বইগুলো পড়ার সুযোগ পায় সে। কিন্তু পরীক্ষার আগে স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় তার। যখন সে জানতে পারে, তার নাম নথিভুক্ত করেনি স্কুল।

দক্ষিণ কন্নড় জেলার আলভার ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। তারপরই পরিবার স্কুল ফি না দিতে পারায় অনলাইন ক্লাসে বসতে পারেনি সে। বোর্ড পরীক্ষায় রেজিস্ট্রশনেও তার নাম পাঠায়নি স্কুল। এমনকী হল টিকিটও দেয়নি স্কুল।

গ্রীষ্মার বাবা বি আর নরসিমহামূর্তি এবং মা পদ্মাভাথাম্মা টি পি এখন স্বপ্ন দেখছেন, একদিন হয়তো মেয়ে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে হয়তো। তাঁদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত সময় জিতে নারাজ ছিল ফি জমা দেওয়ার জন্য। যদিও মেয়ে নবম শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৬ শতাংশ নম্বর পায়।

এরপর স্থানীয় বিচারবিভাগীয় ডেপুটি ডিরেক্টরের কাছে এই ব্যাপারে পড়ুয়ার মা-বাবা আবেদন করেন যাতে বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর কানে যায়। শিক্ষামন্ত্রী সুরেশ কুমার এরকম আরও অভিযোগ পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেন। তিনি ঘোষণা করেন, কোনও স্কুল ফি না দেওয়ার জন্য পড়ুয়াদের বোর্ড পরীক্ষার হল টিকিট আটকাতে পারবে না।

পরে মন্ত্রী পড়ুয়ার বাড়িতে যান এবং তাকে প্রতিশ্রুতি দেন শিক্ষা দফতর তার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। এরপর সেই পরীক্ষা দিতে পারে গ্রীষ্মা। ছাত্রীর সাফল্যের কথা জানতে পেরে মন্ত্রী তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তার স্বপ্ন পূরণের জন্য সাহায্য করতে পেরে আপ্লুত, এই ছাত্রী বাকিদের জন্য অনুপ্রেরণা হবে।

আরও পড়ুন শিশু ও কিশোরদের উপর কোভ্যাক্সিন টিকায় ছাড়পত্র দিল বিশেষজ্ঞ কমিটি

ছাত্রী জানিয়েছে, কর্ণাটক স্কুল শিক্ষা বোর্ড আলভার স্কুলের ছাত্রী হিসাবে তার নাম রেজিস্ট্রেশন করায়। কারণ মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে স্কুল তার নাম পাঠাতে বাধ্য হয়। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিজয়া টি মূর্তির অভিযোগ, দশম শ্রেণিতে ওঠার পর একবারও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি গ্রীষ্মার মা-বাবা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

karnataka SSLC Exams
Advertisment