Viswa Hindu Parisad: তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডূতে পশুর চর্বি ব্যবহার করা হয়েছে বলে চন্দ্রবাবু নাইডুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত বিতর্ক। এবার মন্দিরের উপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ হটাতে আসরে নেমেছে ভিএইচপি। 'সংখ্যালঘুরা যদি চালাতে পারে, তাহলে হিন্দুরা পারবে না কেন'? সেই প্রশ্ন তুলে মন্দিরগুলিকে 'সরকারি নিয়ন্ত্রণ' থেকে সম্পুর্ণ মুক্ত করতে ভিএইচপি প্রচার শুরু করতে চলেছে ৷
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ হিন্দু মন্দিরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ 'হিন্দু সম্প্রদায়ের' হাতে তুলে দিতে দেশব্যাপী প্রচার চালাবে। এই প্রচারের অধীনে, ভিএইচপি-র সমস্ত রাজ্য শাখা তাদের নিজ নিজ রাজ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালাবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালদের সঙ্গে দেখা করবেন প্রতিনিধিরা এবং মন্দিরগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে স্মারকলিপি জমা দেবেন। ভিএইচপি বলছে, মন্দিরগুলিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে প্রতিবাদ ও সামাজিক সচেতনতা চালানো হবে।
উৎসবের মেজাজে উপত্যকায় ভোট, 'পর্যবেক্ষণে' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিক দেশের কূটনীতিকরা
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতা ডক্টর সুরেন্দ্র জৈন মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, 'আদালত এর আগে অনেক সিদ্ধান্তে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে 'মন্দির পরিচালনা' করা সরকারের কাজ নয়। তিনি আরও বলেছেন, 'তিরুপতি বিতর্ক যেভাবে সামনে এসেছে তাতে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এখন 'হিন্দু মন্দির প্রশাসন' হিন্দু সমাজের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।
ভিএইচপির মতে, হিন্দু মন্দিরের অর্থ হিন্দু সমাজের দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা উচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটি 'হিন্দুদের জন্য হিন্দু সমাজ কা ধন' নামে একটি প্রচার চালাবে। শুরু হবে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দির থেকে। ভিএইচপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় আরও বলেন, রাজ্য সরকার যদি মন্দিরগুলি হিন্দু সমাজের কাছে হস্তান্তর না করে তবে সংগঠন আদালতের দ্বারস্থ হবে। পাশাপাশি জোরালো আওয়াজ তুলে তিনি এও বলেন, 'আজ থেকে আমাদের সংকল্প হল সারা দেশের মন্দিরগুলিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে সমাজের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর জন্য, প্রতিটি রাজ্যে প্রথমে বিক্ষোভ ও আন্দোলন করা হবে এবং আমাদের স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীদের মাধ্যমে রাজ্যপালদের কাছে জমা দেওয়া হবে।
'দিদির আশীর্বাদে ভালো আছি, দিদির পাশে থাকব', ঘরে ফিরেই বার্তা অনুব্রত মণ্ডলের
‘আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে’
তিনি বলেন, ন্যায়বিচার পেতে যেখানেই প্রয়োজন, আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে। জৈন বলেন, প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আন্দোলনও শুরু করা হবে। রাজ্য সরকারগুলি মন্দিরগুলির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ সংবিধানের লঙ্ঘন এবং আদালতগুলি 'বারবার বলেছে যে মন্দিরগুলি চালানো সরকারের কাজ নয়'। অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দিরই একমাত্র মন্দির নয় যেখান থেকে 'প্রসাদম' তৈরিতে পশুর চর্বি ব্যবহারের অভিযোগ সামনে এসেছে। তাঁর দাবি, 'এর আগেও কেরলের শবরীমালা মন্দির থেকেো এই ধরণের অভিযোগ এসেছিল। সারা দেশে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন মন্দিরের সম্পত্তির 'আর্থিক অনিয়ম ও অপব্যবহারের' রিপোর্টও পাওয়া গেছে'। জৈন অভিযোগ করেন, যে শুধুমাত্র তামিলনাড়ুতে ৪০০ টিরও বেশি মন্দির সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ৪০০টি মন্দির থেকে প্রতি বছর ৬হাজার কোটি টাকা আয় হয়। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে আয়ের হিসাবে ২০০ কোটি টাকা।
তিরুপতি লাড্ডু বিতর্কের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি
তিরুপতি লাড্ডু বিতর্কে, ভিএইচপি কর্মকর্তা দাবি করেন, যে এই বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হোক এবং সত্যিই যদি এই অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। মন্দিরগুলির উপর রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ 'ঔপনিবেশিক মানসিকতা' এবং 'দাসত্বের প্রতীক' বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, 'সংখ্যালঘুরা যখন নিজেদের প্রতিষ্ঠান চালাতে পারে, হিন্দুরা কেন নয়।'