মণিপুরের বিভিন্ন অংশে উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর আয়োজিত গণসমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ছড়ানোর পর গোটা পার্বত্য রাজ্যজুড়ে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার নিয়েছে যে, স্বরাষ্ট্র দফতর জেলাশাসকদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, গন্ডগোলে বাড়াবাড়ি দেখলেই গুলি চালাতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।
মঙ্গলবার থেকে গোটা রাজ্যে পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মণিপুর সরকার বেশিরভাগ জেলায় কারফিউ জারি করেছে। গত ১৯ এপ্রিল মণিপুর হাইকোর্ট রাজ্যের মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি (এসটি) বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরই উপজাতি গোষ্ঠীগুলো প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল। যাকে ঘিরে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরেই মেইতি সম্প্রদায়, যাঁদের বাস মূলত পাহাড়ের সমতলে, তাদের সঙ্গে পাহাড়ে উঁচু অংশ থাকা উপজাতিরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘর-বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমনিতে মেইতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মণিপুর পাহাড়ের উপজাতিদের দীর্ঘদিনের বিবাদ। সেই বিবাদই নতুন করে বেড়ে উঠেছে তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির দাবিকে ঘিরে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেই ভিডিওয় বীরেন সিং বলেছেন, 'আমরা রাজ্যের সমস্ত জনসাধারণের জান-মাল রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণ এবং তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের বিভিন্ন অভিযোগের যথাযথ নিষ্পত্তি করা হবে।'
আরও পড়ুন- দিল্লি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে যন্তর-মন্তরে বিক্ষোভে বাধা দিচ্ছে, অভিযোগ প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের
তবে তাতেও উত্তেজনার তেমন একটা অবসান হয়েছে বলে জানা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে চরম সতর্ক প্রশাসন। বাড়ানো হয়েছে আধাসেনার সংখ্যা। কোথাও সংঘর্ষের বাড়াবাড়ি দেখলেই গুলি চালাতে হবে বলে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জঙ্গি উপদ্রুত দেশের পার্বত্য রাজ্য মণিপুরে বর্তমানে বিজেপির হাতেই শাসনক্ষমতা। উপজাতি এবং মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে গন্ডগোলের সুযোগ যাতে জঙ্গিরা নিতে না-পারে, সেজন্য রীতিমতো সতর্ক প্রশাসন। পাশেই মায়ানমার। সেখান দিয়ে যাতে জঙ্গিরা প্রবেশ করতে না-পারে, সেজন্য সীমান্ত অঞ্চলগুলোয় রক্ষীদের নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।