কেন্দ্র-কৃষক আলোচনার দশম রাউন্ডও কার্যত নিষ্ফলা। মিলল না কোনও সমাধান সূত্র। তবে, বুধবারের আলোচনায় কেন্দ্রীয় সরকার কিছুটা হলেও সুর নরম করে নয়া তিন কৃষি আইন আগামী দেড় বছরের জন্য স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে কেন্দ্রের এই প্রস্তাব রাজি নয় বৈঠকে যোগদানকারী কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনার পর তাঁরা কেন্দ্রের প্রস্তাব নিয়ে বৃহস্পতিবার জাবাব দেবেন। জানা গিয়েছে, সহায়ক মূল্য নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের কথা বলেছে কেন্দ্র। ওই কমিটি কৃষি আইন নিয়েও মতামত দেবে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২২ জানুয়ারি একাদশ রাউন্ডের কেন্দ্র-কৃষক বৈঠকের দিন ধার্য হয়েছে।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার বলেছেন, 'আলোচনাতে আমরা বলেছি যে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী দেড় বছর নয়া তিন কৃষি আইন স্থগিতের জন্য প্রস্তুত। কৃষক প্রতিনিধিরা এখনও আইন বাতিলের পক্ষে অনড় থাকলেও ওরা এই প্রস্তাব ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। মনে হয় আলোচনা সঠিক পথেই এগোচ্ছে।'
ইতিমধ্যেই কৃষক আন্দোলের সমর্থক বেশ কয়েকজন কৃষক নেতাকে এনআইএ নোটিস জারি করে তলব করেছে। কৃষকদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখাতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কেন্দ্র ব্যবহার করছে। এদিনের বৈঠকে এনআইএ নোটিসের বিষয়টি কৃষক প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন। কেন্দ্রের তরফে বৈঠকে প্রতিনিধিত্বকারীরা আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন- কৃষকদের ট্রাক্টর প্যারেড আটকাতে করা মামলা প্রত্যাহার করল কেন্দ্র
এদিকে, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্রাক্টর ব়়্যালি কর্মসূচিতে হস্তক্ষেপ করা অনভিপ্রেত হবে। তাই তারা পুলিশের উপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার বিষয় পুলিশ দেখবে, আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। এরপরই প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে কৃষকদের ট্রাক্টর প্যারেড রুখতে যে মামলা দায়ের করেছিল কেন্দ্র এদিন সেটি প্রত্যাহার করে নেয় মোদী সরকার।
একই সঙ্গে কৃষি আইন পর্যালোচনার জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞ কমিটি নিয়ে কৃষকদের মতামতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কমিটির সদস্যদের নিয়ে যে ধরনের মত, শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা ব্যথিত করেছে শীর্ষ আদালতকে। প্রধান বিচারপতি বোবদে জানিয়েছেন, জনস্বার্থেই এই কমিটি তৈরি করে দেয় আদালত। কোনও সদস্যকে নিয়ে সমস্যা থাকতেই পারে, কিন্তু কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা খুবই অপমানকর। এভাবে কোনও নিযুক্ত কমিটি সদস্যের সম্মান নষ্ট করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, বলেছেন প্রধান বিচারপতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন