জামিন মঞ্জুর গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগনেশ মেভানির। অসম পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন এক মহিলা পুলিশ আধিকারিককে লঞ্ছনার অভিযোগে গ্রেফতার হন জিগনেশ। যদিও অসমের বরপেটার আদালত জিগনেশের বিরুদ্ধে দায়ের এফআইআর-কে মিথ্যা বলে অভিহিত করে তুলোধনা করেছে অসম পুলিশকে। অসম পুলিশ আদালত ও আইন-এর অপব্যবহার করেছে বলেও মনে করেন বিচারক। জিগনেশের জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্রশাসনকে সতর্ক করে বরপেটার আদালতের পর্যবেক্ষণ, ''কষ্টার্জিত গণতন্ত্রকে একটি পুলিশ-রাজ্যে রূপান্তরিত করার চেষ্টা হচ্ছে।"
জিগনেশ মামলার রায়দানের সময় অসমের পুলিশ প্রশাসনকে কড়াভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন বরপেটা জেলা ও দায়রা বিচারক অপরেশ চক্রবর্তী। রাজ্য পুলিশ 'বাড়াবাড়ি' করছে বলে মনে করেন বিচারক চক্রবর্তী। তিনি এখনই গুয়াহাটি হাইকোর্টকে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের নির্দেশ দিতেও আবেদন জানিয়েছেন। গুজরাতের নির্দল বিধায়কের জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে বিচারক আরও বলেন, ''কষ্ট করে অর্জিত গণতন্ত্রকে একটি পুলিশ-রাজ্যে রূপান্তর করার চেষ্টার কথা ভাবাই যায় না। অসম পুলিশ এটা করলে হলে তবে তা বিকৃত একটি চিন্তাভাবনা।"
জিগনেশ মেভানিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেই মনে করে বরপেটার আদালত। এব্যাপারে আদালতের নিশানায় অসম পুলিশ। রাজ্য পুলিশের সংস্কারে একাধিক ব্যাবস্থার উল্লেখ করে হাইকোর্টের নির্দেশিকার দাবি জানিয়েছেন বরপেটার আদালতের বিচারক।
আরও পড়ুন- ভয় ধরাচ্ছে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ, দেশে লাফিয়ে বাড়ছে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা
তাঁর কথায়, ''প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজের সময় বডি-ক্যামেরা পরতে হবে। কাউকে গ্রেফতার করতে গেলে গাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। কোনও সামগ্রী উদ্ধারের জন্য বা অন্য কোনও কারণে কাউকে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্যও সব থানায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে।'' জিগনেশের মতো 'মিথ্যা' এফআইআর দায়ের করে মানুষকে হয়রান করা বন্ধ করতে এই ব্যবস্থাগুলি অবিলম্বে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে বরপেটার আদালত।
বরপেটার আদালতের নির্দেশ, জিগনেশের জামিন মঞ্জুরের কপির একটি অনুলিপি প্রধান বিচারপতির সামনে রাখার জন্য হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানো হবে। বিচারক বলেন, ''এই দিকটি খতিয়ে দেখতে হবে। বিষয়টিকে জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) হিসেবে নেওয়া যেতে পারে কিনা তা বিবেচনা করতে হবে। রাজ্যে পুলিশের বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে হবে।" উল্লেখ্য, গত মাসে অসম বিধানসভায় পেশ করা তথ্য বলছে, ২০২১-এর মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পুলিশের গুলিতে ২৯ জন নিহত এবং ৯৬ জন আহত হয়েছেন।
Read full story in English