Advertisment

'হালাল-মাংস' ইস্যুতেই রাজ্যে বিঘ্নিত শান্তির পরিবেশ , বিজেপিকে দুষছেন সিদ্দারামাইয়া

হালাল ইস্যু নিয়ে বিজেপিকেই দুষলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

হালাল ইস্যু রাজ্যের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করেছে, বিজেপিকে একহাত নিয়ে মন্তব্য সিদ্দারামাইয়ার

হিজাব বিতর্কের পর কর্ণাটকে অব্যাহত হালাল মাংস বিতর্ক। হালাল মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার দাবি বাড়ছে কর্নাটকে। রাজ্যের শিবমোগা জেলার ভদ্রাবতীতে বজরং দলের কিছু কর্মী গত বুধবার একটি হোটেলে ঢুকে সেখানকার এক কর্মীকে লাঞ্ছিত করেছে। পরের দিন, বৃহস্পতিবার শহরের একজন হোটেল মালিককে হালাল মাংস ব্যবহারের জন্য অতি ডানপন্থীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল। এবার হালাল ইস্যতে মুখ খুলেছেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেছেন "লোকেদের হালাল মাংস বা অন্য কোন ধরনের মাংস খাওয়া উচিত কিনা তা এমন বিষয় নিয়ে ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলি সমাজে বিভাজনের বীজ বপন করার জন্য একটি প্রধান ইস্যু হিসাবে তৈরি করছে, এটি সমাজকে বিভাজনের একটি চক্রান্ত মাত্র"।

Advertisment

কর্ণাটকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "অপ্রয়োজনীয়ভাবে ডানপন্থী দল এবং এক শ্রেণির মানুষ এমন একটি সমস্যা উত্থাপন করছে যা মানুষ এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক এবং বন্ধনকে প্রভাবিত করে। এগুলি এমন সমস্যা নয় যা মানুষের বা মানুষের জীবনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। তারা এই বিষয়গুলি উত্থাপন করছে এবং সমাজে শান্তি নষ্ট করছে,”।

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, "বছরের পর বছর ধরে হালাল প্রথা চলে আসছে। এটা তাদের অভ্যাস, তাদের এই ব্যাপারে নাক গলানো উচিত নয়। আমরা কি মন্দিরের উৎসবে পাঁঠা বলি দিই না? চারিদিকে রক্ত ​​ছড়িয়ে পড়ে না। নিয়মিত উৎসবের জন্য আমরা আমাদের রীতি অনুসারে পাঁঠা বলি দিই। সুতরাং সব ধর্মের মানুষের তাদের স্বাধীনতা অনুসারে কাজ করতে দেওয়া উচিত"। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, 'আমরা কি হালাল মাংস কিনে খাই না? আমরা এটা প্রায়ই খাই,”! বিভাজনমূলক বিষয়গুলি উত্থাপন করে বিজেপি রাজ্যের শান্তি নষ্টের পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনৈতিক গতিকে ব্যাহত করছে'।

আরো পড়ুন: ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের অবস্থানে খুশি সব দেশ’, দাবি রাজনাথের

তিনি আরও বলেন, "আইন-শৃঙ্খলা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে একটি সংযোগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা না থাকলে বিনিয়োগ হবে না, বিনিয়োগ ছাড়া শিল্পের উন্নয়ন হবে না, বিনিয়োগ ছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না, চাকরি না থাকলে মানুষের হাতে টাকা আসবে না, ফলে রাষ্ট্র ও দেশের উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা অকারণে এই ধরণের বিষয় নিয়ে সমাজের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে চলেছে তাদের এই বিষয়গুলি বোঝা উচিত'।

হিজাব বিতর্ক এবং মন্দির চত্বরে বা পুজোর মেলায় স্টল স্থাপনে মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞা জারির চাপ বাড়ছে। তার মধ্যেই মাথাচাড়া দিচ্ছে হালাল বিতর্ক। অতি ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী কর্মীরা রাজ্যের বিভিন্ন অংশে গিয়ে লিফলেট বিতরণ করছে এবং লোকেদের শুধুমাত্র “হিন্দু দোকান” থেকেই মাংস কেনার জন্য অনুরোধ করছেন।

ডানপন্থী অতি হিন্দত্ববাদী দলগুলো হালাল মাংসের বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রচার শুরু করেছে। এই সপ্তাহের শুরুতে হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি, শ্রী রাম সেনে এবং বজরং দলের মতো সংগঠনগুলি মাংসের দোকানের সাইনবোর্ড থেকে হালাল শংসাপত্র অপসারণের আহ্বান জানানোর পরে বিক্ষোভ গতি পেয়েছে।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার হালাল মাংস বয়কট করার দাবিটি খতিয়ে দেখছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই বিক্ষোভ ঘিরে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। ফলে এখনই প্রশাসনের পক্ষে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই বুধবার বলেছেন যে, তিনি হালাল মাংসের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবেন। সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন , ‘পুরো বিষয়টি ভালো করে জানতে হবে। হালাল বিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হচ্ছে। এসব ঘটনার পরও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটুট রয়েছে। অনেকেই বিক্ষোভকারীদের মদত দিচ্ছে, আমরা জানি কী করতে হবে এবং কী করতে হবে না।’

Read full story in English

Siddaramaiah karnataka Halal meat
Advertisment