Advertisment

Kuwait fire: কলেজের প্রথম দিনে বাবাকে আর পাশে পাওয়া হল না, মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ মৃত্যু, দিশেহারা পরিবার

অগ্নিকাণ্ডে বেশ কয়েকজন ভারতীয়-সহ অন্তত ৪৯ জন মারা গিয়েছেন। আহত ৫০ জনেরও বেশি। ওই আবাসনে প্রায় ১৯৫ জন বসবাস করতেন। আবাসিকরা একই কোম্পানির শ্রমিক বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সকলেরই বয়স ২০-৫০।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kuwait building fire, world news, indians died, indian express

বুধবার, 12 জুন, 2024, কুয়েতের মাঙ্গাফে একটি বিল্ডিংয়ে আগুন লাগার পর ধোঁয়া উড়ছে। কর্মকর্তাদের মতে, কমপক্ষে 41 জন নিহত হয়েছেন। (পিটিআই ছবি)

Kuwait Building Fire Updates:দক্ষিণ কুয়েতের মাংগাফ শহরের এক আবাসনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বেশ কয়েকজন ভারতীয়-সহ অন্তত ৪৯ জন মারা গিয়েছেন। আহত ৫০ জনেরও বেশি। ওই আবাসনে প্রায় ১৯৫ জন বসবাস করতেন। আবাসিকরা একই কোম্পানির শ্রমিক বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। ভারত থেকে বহু লোক আরব দেশগুলোতে কাজ করতে যান। তার মধ্যে কুয়েতেও অনেকে কাজের সূত্রে যান। মৃত ভারতীয়রা সেভাবেই কুয়েতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে এমনটা জানা গিয়েছে।

Advertisment

এই পরিস্থিতিতে কুয়েতের পথে রওনা দিয়েছেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে আমরা অবিলম্বে কুয়েতের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। অগ্নিকাণ্ডে আহতদের পাশে থাকতে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় রেখে মৃতদের দেহ দ্রুত দেশে ফেরানোর চেষ্টা করব।' ঘটনায় মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এককালীন অনুদান ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

অগ্নিকাণ্ডে যে ভারতীয়রা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেরলের বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও রয়েছেন। এই কথা জানার পর কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন মৃতদের দেহ ফেরানোর জন্য বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে চিঠি দিয়েছেন। মৃতদের একজনের দেহ ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা সমীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন, 'কুয়েত শহরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি দুঃখজনক। যাঁরা তাঁদের নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। প্রার্থনা করি, যাতে আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। কুয়েতে ভারতীয় দূতাবাস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। আহতদের সহায়তার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে।'

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'কুয়েতের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন। বেশ কয়েকজন ভারতীয় শ্রমিক ওখানে মারা গিয়েছেন। অনেকেই আহত হয়েছেন। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা আছে। আমরা আহতদের সঙ্গে আছি। আমরা বিনীতভাবে বিদেশ মন্ত্রকের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাঁদের পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।'

এই জরুরি পরিস্থিতিতে কুয়েতের ভারতীয় দূতাবাস হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দূতাবাস কর্তারা লিখেছেন, 'দূতাবাস একটি জরুরি হেল্পলাইন নম্বর +৯৬৫-৬৫৫০৫২৪৬ চালু করেছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে এই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। দূতাবাস সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

আরও পড়ুন- <Puri-Jagannath temple: অভাবনীয় পদক্ষেপ! পুন্যার্থীদের জন্য অকল্পনীয় উদ্যোগ! পুরীর জগন্নাথ মন্দির নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত>

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ বছর বয়সী ভাদাক্কোত্তুভিলাইল লুকোস। কোল্লামের আদিচানাল্লুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তিনি এবং গত ১৮ বছর ধরে কর্মসূত্রে তিনি কুয়েতে রয়েছেন। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, “তার বড় মেয়ে লিদিয়ার কলেজে ভর্তির জন্য আগামী মাসে বাড়িতে আসার কথা ছিল, যে সব বিষয়ে এ-প্লাস নম্বর পেতে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়েছে। মেয়ের এই মারকাটারি রেজাল্টে তিনি গর্বিত ছিলেন। কুয়েতে যাওয়ার আগে, তিনি মেকানিক হিসাবে কাজ করতেন। ছোট মেয়েক্লাস ফাইভে পড়ে।

আগুনের বলি কে রঞ্জিত, তিনি সেখানে হিসাবরক্ষক হিসাবে কাজ করতেন। পরিবারের এক বন্ধু জানিয়েছেন, "তার বাড়ি ফিতে যাওয়ার কথা থাকলেও টিকিট কনফার্ম না হওয়ায় তার আর দেশে ফেরা হলো না"। রঞ্জিত গত ১০ বছর ধরে কুয়েতে ছিলেন। “তিনি দু বছর আগে দেশে এসেছিলেন। সেই শেষ বার। এবার বাড়ি ফিরলে তার বিয়ের প্ল্যানিং ছিল", জানিয়েছেন শিবপ্রসাদ। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা , মা ও দুই ভাইবোন।

শামির উমরুদ্দিন (৩০)ও আগুনে প্রাণ হারান। কোল্লামের সাস্তমকোট্টার বাসিন্দা, তিনি এনবিটিসি গ্রুপে ড্রাইভার হিসাবে কাজ করতেন।

তার আত্মীয় সাভাদ জানান, তিনি গত পাঁচ বছর ধরে এই ফার্মে চাকরি করছেন। “কুয়েতে যাওয়ার আগে তিনি কোল্লামেও ড্রাইভারি করতেন। তিন বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন এবং সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে শেষমেষ তিনি কুয়েতে পাড়ি দেন।

দ্য আরব টাইমস জানিয়েছে, নিহতদের বেশিরভাগই ভারতীয় নাগরিক, যাদের বয়স ২০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, তারা সকলেই সেখানকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন। যে বিল্ডিংটিতে আগুন লেগেছিল তাতে ১৯৫ জনেরও বেশি শ্রমিক ছিল।

kuwait building fire, Shameer Umarudheen kuwait, indian express
কোল্লামের শামির উমরুদ্দিন কুয়েতে ড্রাইভার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
kerala fire national news
Advertisment