করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে তেলাপাড় গোটা দেশ। রাজ্যে-রাজ্যে ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। মাত্রাছাড়া সংক্রমণে লাগাম পরাতে জারি বিধি-নিষেধেও ফল মিলছে না। দেশের মধ্যে ৬টি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের তরফে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরও কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
গত এক সপ্তাহে দেশের ৫১৫টি জেলায় ৫ শতাংশেরও বেশি করোনা পজিটিভিটি রেট ছিল। বৃহস্পতিবারই স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, করোনার অত্যন্ত সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দেশের প্রায় সমস্ত অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়লেও উচ্চ গতিতে টিকাকরণের জেরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো ঘটনা বা মৃত্যুর ঘটনা এক্ষেত্রে অনেক কম। স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, এই মুহুর্তে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জেরে তীব্র গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট প্রায় ১৬ শতাংশ হয়েছে।
দেশের কোভিড টাস্ক ফোর্সের প্রধান ডাঃ ভিকে পল বলেন, ''মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতি দেখলেই বোঝা যাচ্ছে যে তৃতীয় ঢেউ এখন দেশের প্রায় সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। এটাও স্পষ্ট যে মৃতের সংখ্যা কম। টিকা একটি ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবেই কম। তবে ১৬ শতাংশের বেশি পজিটিভিটি রেট বেশ বেশি। এমন কিছু রাজ্য রয়েছে যেখানে ৫০ শতাংশ পজিটিভিটি রেট রয়েছে (গোয়া)। ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। টিকা ও মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে।''
দেশের ৬টি রাজ্যের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ৬টি রাজ্যে করোনা পজিটিভিটি রেট যা ছিল তার চেয়ে বেশ খানিকটা বেড়েছে ২০ জানুয়ারির পাওয়া পরিসংখ্যানে। মহারাষ্ট্রে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পজিটিভিটি রেট ছিল ২০.৩৫ শতাংশ। ২০ জানুয়ারি তা বেড়ে হয়েছে ২২.১২ শতাংশ। কর্নাটকে ৬.৭৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫.১২ শতাংশ। তামিলনাড়ুতে ১০.৭০ শতাংশ থেকে বেড়ে পজিটিভিটি রেট হয়েছে ২০.৫০ শতাংশ।
আরও পড়ুন- টিকাকরণে দেশে পুরুষদের থেকে অনেক পিছিয়ে মহিলারা
কেরলে ১৩ জানুয়ারি করোনা পজিটিভিটি রেট ছিল ১২.২৮ শতাংশ। ২০ জানুয়ারি তা বেড়ে হয়েছে ৩২.৩৪ শতাংশ। রাজধানী দিল্লিতে ২১.৭০ শতাংশ থেকে বেড়ে করোনা পজিটিভিটি রেট বেড়ে হয়েছে ৩০.৫৩ শতাংশ। উত্তর প্রদেশে ৩.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে পজিটিভিটি রেট হয়েছে ৬.৩৩ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ''এই রাজ্যগুলির সঙ্গে আমরা ক্রমাগত যোগাযোগ করছি এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।। এই রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছে। সেই দল বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করেছে। রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।''
Read full story in English