অন্য যৌনতার মানুষরা যথাযথ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হন। এ কোনও অধিকারকর্মী বা এলজিবিটি গোষ্ঠীর অভিযোগ নয়, এ পর্যবেক্ষণ সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতির।
বেঞ্চের একমাত্র মহিলা বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা এদিন একই সঙ্গে আরও বলেছেন, ‘‘সমকামীরা পারিবারিক চাপের জন্য নিজেদের যৌনতার কথা গোপন করতে বাধ্য হন এবং অনেক ক্ষেত্রে বিয়েও করে ফেলেন। হতাশা থেকেই বহুসময়ে তাঁরা উভকামী হয়ে যান। যেসব সন্তানরা জানতে পারে যে তাদের বাবা বা মা সমকামী, তাদের মানসিক ট্রমার কী হবে!’’ একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়েছেন, শুধু মানুষ নয়, প্রায় ১০০ অন্য প্রজাতির জীব রয়েছে যারা সমকামী।
৩৭৭ ধারা অবলুপ্ত হবে কিনা সে নিয়ে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। পাঁচ সদস্যের এই বেঞ্চের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। এ ছাড়া ওই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এ এম খানউইলকর, আর এফ নরিম্যান, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং ইন্দু মালহোত্রা।
আরও পড়ুন, ৩৭৭ ধারা বাতিল: সম্মতিপূর্বক সমকাম নিয়ে অবস্থান নিল না কেন্দ্র
এ প্রসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা আইনের ২১এ ধারার কথা তুলে বিচারপতি চন্দ্রচূড় মনে করিয়ে দেন, যৌনপছন্দের জন্য কেউ যে বৈষম্যের শিকার হতে পারেন না, তা সংসদেও স্বীকৃত হয়েছে।
আবেদনকারীদের পক্ষে এক আইনজীবী অশোক দেশাই সওয়াল করেন, দীর্ঘদিন আগেও এ দেশে সমকামী সম্পর্কের প্রচলন ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রাচীন ভারতের সঙ্গে কোম্পানি রাজত্বের ভারতের উদাহরণ তুলে ধরেন।
প্রবীণ আইনজীবী কৃষ্ণণ ভেনুগোপাল আদালতে বলেন, ৩৭৭ ধারার কারণে সমকামীরা তাঁদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে বলতে পারেন না, এর ফলে তাঁদের বাকস্বাধীনতার অধিকার খর্বিত হয়।
৩৭৭ ধারা বহাল রাখার পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী দুটি সংগঠনের পক্ষের আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, কেন্দ্র সরকার সম্পূর্ণ উল্টোদিকে হেঁটেছে। এর উত্তরে বিচারপতি খানউইলকর বলেন, একে উল্টোদিকে হাঁটা বলে না। পুট্টুস্বামী রায়ের পর একে আইনের ক্রমবিকাশ বলেও দেখা যেতে পারে।
৩৭৭ ধারা বাতিল নিয় এই বেঞ্চের পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার।