২২ বছর আগে ফ্লাইট আইসি ৮১৪ বিমান হাইজ্যাকারদের অন্যতম মাথা জাহুর মিস্ত্রি পাকিস্তানে নিহত। দুই বাইক আরোহী দুষ্কৃতী গত ১ মার্চ তাকে গুলি করে খুন করেছে বলে পাকি মিডিয়ার রিপোর্টে দাবি। করাচির আখতার কলোনিতে এই খুনের ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে পাক মিডিয়া জিও টিভিতে। সেই রিপোর্টে মিস্ত্রিকে করাচির এক ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। মিস্ত্রি করাচিতে জাহিদ আখুন্দ নাম নিয়ে এতদিন বাস করছিল। ক্রেসেন্ট ফার্নিচার নামে একটি দোকান ছিল তার।
কিন্তু মিস্ত্রি যে কত বড় দাগী অপরাধী তা ভারতের থেকে কে ভাল জানে। পাক মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, মিস্ত্রির শেষকৃত্যে হাজির ছিল জইশ-ই-মহম্মদের সুপ্রিমো মাসুদ আজহারের ভাই রাউফ আসঘার এবং জঙ্গি গোষ্ঠীর অন্যান্যরা। স্থানীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত, কীভাবে আততায়ীরা মিস্ত্রিকে গুলি করছে তা ধরা পড়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।
২৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি ৮১৪ বিমান নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট থেকে ওড়ার পর দিল্লি আসার পথে ছিনতাই হয়। পাঁচ অপহরণকারীর মধ্যে মিস্ত্রিও ছিল। রাউফ আসঘার, মাসুদের বড় ভাই ইব্রাহিম আজহারও সেই হাইজ্যাকারদের মধ্যে ছিল। বিমানে মিস্ত্রি এক ভারতীয় যাত্রীকে খুন করে। মাঝে কেটে গিয়েছে ২২ বছর। এতদিনের ক্ষত বুকে বয়ে বেড়াচ্ছিলেন রুপিন কাটিয়ালের বাবা। মাত্র ২৫ বছরের ছেলেটা তখন মধুচন্দ্রিমা সেরে দেশে ফিরছিলেন। কাঠমান্ডু থেকে দিল্লির বিমান ধরেছিলেন রুপিন। কে জানত, জীবনে নেমে আসবে এমন অন্ধকার।
আরও পড়ুন ‘মা-বাবাকে মিথ্যে বলতাম’, খারকিভ থেকে ফিরে দুঃস্বপ্নের অভিজ্ঞতা জানালেন পড়ুয়ারা
দিল্লির পথে লখনউয়ের উপর দিয়ে ওড়ার সময় বিমানটি হাইজ্যাক করে জ্বালানি ভরার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় অমৃতসরে। লখনউ থেকে বিমানটি লাহোরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু পাকিস্তান বিমান নামার অনুমতি দেয়নি। তখন বিমানটি কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয। ১৮০ জন যাত্রী ছিলেন বিমানে। সেই সময় প্রথম তালিবান সরকার পণবন্দি যাত্রীদের মুক্তির জন্য সমঝোতায় নামে।
আরও পড়ুন বিভীষিকার ২ সপ্তাহ, অবশেষে সুমি থেকে দেশে ফিরছে পড়ুয়াদের শেষ দল
এক সপ্তাহ পর ৩১ ডিসেম্বর আলোচনা শেষ হয়। সেই সময় ভারত সরকার মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দেয় জেল থেকে, সঙ্গে মুক্তি দেয় ওমার সইদ শেখ এবং মুস্তাক আহমেদ জারগারকে। এই তিনজন তখন হরকত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গি গোষ্ঠীতে ছিল। তালিবানদের হাতে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়ার পর এরা পাকিস্তান চলে যায়। তার পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে একাধিক হামলা চালিয়েছে মাসুদ। ২০১৬ সালে পাঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা, পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে হামলার মাস্টারমাইন্ডও মাসুদ আজহার।