প্রয়োজনে উত্তরপ্রদেশেও লাগু হবে এনআরসি: যোগী আদিত্যনাথ
'আসাম আমাদের পথ দেখিয়েছে। সেই অভিজ্ঞাতাকে ব্যবহার করে পর্যায়ক্রমে উত্তরপ্রদেশে এনআরসি লাগু করা যেতে পারে। এই পদক্ষেপ জাতীয় সুরক্ষা ও অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে খুবই জরুরী।'
'আসাম আমাদের পথ দেখিয়েছে। সেই অভিজ্ঞাতাকে ব্যবহার করে পর্যায়ক্রমে উত্তরপ্রদেশে এনআরসি লাগু করা যেতে পারে। এই পদক্ষেপ জাতীয় সুরক্ষা ও অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে খুবই জরুরী।'
দেশের সুরক্ষায় এনআরসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রের এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ বলে মনে করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রয়োজনে নিজের রাজ্যেও পর্যায়ক্রমে এনআরসি লাগু করা হবে বলে ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেসকে এক সাক্ষাতকারে জানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় ও জন বিস্ফোরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিষয়েও নিজের মতামত জানান যোগী আদিত্য়নাথ।
Advertisment
আসামে সদ্য প্রকাশিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। যার থেকে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নিয়ে মানুষের দিনযাপন। বিজেপির অন্দরেও প্রশ্ন উঠছে এনআরসির পদ্ধতি নিয়ে। তবে, এনআরসি ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন যোগী আদিত্যনাথ। এনআরসির পক্ষে তাঁর যুক্তি, 'আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে এটি একটি সাহসী পদক্ষেপ। এটার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো উচিত। প্রয়োজনে উত্তরপ্রদেশেও এনআরসি লাগু হবে। আসাম আমাদের পথ দেখিয়েছে। সেই অভিজ্ঞাতাকে ব্যবহার করে পর্যায়ক্রমে উত্তরপ্রদেশে এনআরসি লাগু করা যেতে পারে। এই পদক্ষেপ জাতীয় সুরক্ষা ও অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করতে খুবই জরুরী।'
সঙ্ঘ পরিবার অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ই এক্ষেত্রে চূড়ান্ত। দীর্ঘদিনের অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলা মেটাতে উদ্যোগী দেশের শীর্ষ আদালত। বর্তমানে প্রত্যেক দিনই শুনানি চলছে অযোধ্যা মামলার। যোগীর মতে, প্রত্যেকেরই আদালতের উপর আস্থা রয়েছে। রায় যা হবে তা আমরা মেনে নেব। তিনি বলেন, 'চিন্তার কিছু নেই। সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা নিয়ে যে রায়ই দেবে তাই চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে হবে।'
Advertisment
আদালতের প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর এই দৃষ্টিভঙ্গি বেশ তাৎপর্যবাহী বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি তাঁর একটি মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। অযোধ্যা ইস্যুতে, যোগী বলেছিলেন, 'জায়গা, মন্দির ও আদালত সবই আমাদের।' দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের নিন্দা করেন এবং জানান এই ধরণের বক্তব্য কোনও মতেই কাম্য নয়। তারপরই সাক্ষাতকারে আদালতের প্রতি নিজদের আস্থার কথা তুলে ধরেন তিনি।
দেশের জনসংখ্যা উর্ধ্বমুখী। যা নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লা থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দেশবাসীর সচেতনতার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি। এপ্রসঙ্গে, সঙ্ঘ ঘনিষ্ট মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, 'সীমার পরেও কোথাও একটা গণ্ডি থাকা উচিত। তবে, তা কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার জন্য সরকারিস্তরে আলোচনা প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে আমরা তা পর্যায়ক্রমে লাগু করব। আমরা ইতিমধ্যেই এনিয়ে কাজ শুরু করেছি।' প্রসঙ্গত, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দেশের গড়ের চেয়ে বেশি উত্তরপ্রদেশে। বিহারের ঠির পরেই।
এছাড়াও সাক্ষাতকারে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সময়কালে রাজ্য সরকারের নানা সাফল্যের কথা বলেছেন। স্বাস্থ্য ব্য়বস্থা, শিক্ষা, শিক্ষার পাঠক্রম, শিক্ষক সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে বলে দাবি তাঁর। যোগী সরকার উত্তরপ্রদেশে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছে ও আগ্রাধিকার দিয়েছে কর্ম সংস্থান, রাজ্যের বিনিয়োগের উপর। মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।