কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।
শুধু আসাম নয়, সারা দেশ থেকে সমস্ত বেআইনি অভিবাসীদের তাড়াতে বদ্ধপরিকর সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার এ কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন গোটা দেশ থেকে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার দায় কংগ্রেসের।
Advertisment
গুয়াহাটিতে আয়োজিত নেডা (নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স)-র চতুর্থ কনক্লেভে ভাষণ দিতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, "শুধু আসাম নয়, আমাদের লক্ষ্য সারা দেশ থেকে বেআইনি অভিবাসীদের তাড়ানো।"
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অমিত শাহকে উদ্ধৃত করেছে। তিনি বলেছেন, "কংগ্রেস সরকার উত্তর পূর্বে বিদ্রোহের বীজ বপন করেছে। এ দল উত্তরপূর্বের মানুষের জন্য কখনও কিছু ভাবেনি আর সে কারণেই এখানে সন্ত্রাসবাদের উদ্ভব হয়েছে। ওরা সর্বদাই ডিভাইড অ্যান্ড রুলের তত্ত্বে বিশ্বাস করে এসেছে।"
অমিত শাহের এদিনের ভাষণের কেন্দ্রে ছিল অবৈধ অভিবাসী ইস্যু। নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীরা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব) নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান এ ধরনের আইন প্রণয়নের আগে এলাকার রাজ্যগুলির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে।
নেডা কনক্লেভে ভাষণ দেওয়ার সময়ে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও বলেন, অতি বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল উত্তরপূর্ব ভারতের জনবিন্যাস পাল্টে দেবে।
তিনি বলেছেন, "আমরা বিশ্বাস করি এতে উত্তরপূর্বের জনবিন্যাস বদলে যাবে। আমাদের এলাকার পরিস্থিতি বুঝতে হবে।" নাগা শান্তি চুক্তি অগ্রসরমান পরিস্থিতিতে রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।"
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বলেন, উত্তর পূর্বের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে এবং তিনি জিজ্ঞাসা করেন বিল ফের আনার আগে কেন্দ্র এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা এড়িয়ে যাবে কিনা।
সাংমা বলেন, "নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার পর কী হবে? বাংলাদেশ থেকে লোক আসতেই থাকবে? সে আসার কোনও শেষ দিন ঘোষণা করা হবে কি? আমাদের উত্তরপূর্বের লোকজনের এ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।"
অমিত শাহকে সাংমা বলেন, "আমরা ষষ্ঠ তফশিলের আওতাধীন। তাহলে ক্যাব কি স্থানীয় আইনের উপর দিয়ে যাবে! দয়া করে আমাদের আমন্ত্রণ করুন এবং উত্তরপূর্বের জনগণের স্বার্থের বিষয়টি দেখুন। আমার বিশ্বাস আপনি আমাদের আশঙ্কার বিষয়ে বিবেচনা করবেন।"
মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাংগা অবশ্য একধাপ এগিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আওতা থেকে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিকে বাদ রাখতে বলেছেন।
তিনি বলেন, "যদি আদৌ এ বিল কার্যকর হয়, তাহলে দয়া করে দেখবেন যেন উত্তরপূর্বকে এর আওতার বাইরে রাখা হয়। আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি এ অঞ্চলের দুর্বলতার দিকে খেয়াল রাখুন। এখানে ক্যাব অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। যেসব রাজ্যের রাজনৈতিক দল একে সমর্থন করেছে, তারা আত্মহত্যার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।"
গত ৮ জানুয়ারি লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলেও রাজ্যসভায় বিল আনা হয়নি। এই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আগত হিন্দু, জৈন, খ্রিষ্টান, শিখ, বৌদ্ধ ও পার্সিদের এ দেশে সাত বছর বসবাসের পর নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। কোনও রকম নথিপ্রমাণ না থাকলেও তাঁদের এই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।