বিহারের খাগাড়িয়ায় গত ২০ জুন ১২৫ দিনের কাজের বিশেষ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্য়াণ অভিযানের সূচনা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই জেলারই আলৌলি এলাকায় কাজের প্রাপ্তি সেভাবে মিলছে না। আবার যেটুকু কাজ মিলছে, তার পারিশ্রমিকে মন ভরছে না কর্মপ্রার্থীদের। আলৌলির হরিপুর, মেঘৌনা, সাহসি এলাকায় প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি কেমন হয়েছে, তা দেখতে ওই এলাকায় ঘুরে দেখেছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
২ মাস আগে পর্যন্ত মাসের শেষে ১১ হাজার টাকা করে রোজগার করতেন অষ্টাদশী ব্রজেশ কুমার। উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে একটি ব্লেড কারখানায় কাজ করতেন তিনি। লকডাউনের জেরে আলৌলির হরিপুরে নিজের গ্রামে ফিরে এসেছেন ব্রজেশ। গ্রামে ফিরে মনরেগা প্রকল্পে কাজ করছেন। গত ২ মাসে তিনি মোট ৬ হাজার টাকা রোজগার করেছেন। যার মধ্য়ে মনরেগায় কাজ করে পেয়েছেন ১৪০০ টাকা।
ব্রজেশের কথায়, ''কম টাকায় এ ধরনের ছোটখাটো কাজের জন্য় বিহারে দীর্ঘদিন কেউ থাকবেন না। আমি আবার পড়াশোনা শুরু করতে চাই। ভাল পেশাদার কোর্স করতে চাই ভাল কাজের সুযোগের জন্য়''।
অন্য়দিকে, সাহসির গিড্ডা গ্রামে ২টি গো-শালার কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলৌলির মনরেগা জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র সুনীল কুমার। তিনি আরও জানিয়েছেন, ''প্রকল্পের ৪৯ শতাংশ খরচ করা হয়েছে শ্রমিকদের জন্য়। অতিরিক্ত ২০ দিনের জন্য় ৬ জন কাজ পেয়েছেন''।
আরও পড়ুন: “আমেরিকায় ভারতীয়দের ভিসা বাতিল সিদ্ধান্তে মোদী সরকার নীরব কেন?”
কিন্তু ওই দুটি গোশালার মধ্য়ে একটি মহাবীর যাদবের বাড়িতে তৈরি করা হয়েছিল। যা এই প্রকল্পের সূচনার আগে তৈরি করা হয়েছিল। মহাবীর জানিয়েছেন, ১৪ দিন কাজ করেছিলেন তিনি, কিন্তু এখনও টাকা পাননি। উল্লেখ্য়, মনরেগা প্রকল্পে দিন পিছু কাজে এক কর্মী পান ১৭৭ টাকা।
রাম দরেশ যাদবের গোশালার কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। তাঁর স্ত্রীর কথায়, ''কিছুদিন ধরে কাজ বন্ধ। অন্য়ান্য় পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে আমার স্বামীও কাজ করেছিল। দিল্লি থেকে বাড়িতে এসেছে আমার স্বামী। সেখানে মুদি বাজারে কাজ করত''। কেন কাজ বন্ধ, সে ব্য়াপারে কোনও ব্য়াখ্য়া দিতে পারেননি প্রোগ্রাম অফিসার।
প্রধানমন্ত্রীর কাজের প্রকল্পের সূচনা যেদিন থেকে হয়েছে, তারপর থেকে কোনও কর্মসংস্থান হয়নি মেঘৌনা পঞ্চায়েত এলাকায়। আলৌলিতে ২১টি পঞ্চায়েতের মধ্য়ে ১০টি পঞ্চায়েত এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
আলৌলির বিডিও অজিত কুমার জানিয়েছেন, ''গোটা ব্লকে ৩টি প্রকল্পের কাজ রয়েছে এখনও পর্যন্ত। ২১টি কমিউনিটি শৌচালয়, ৩ হাজার বাড়ি তৈরির কাজ ও মনরেগার কাজ। তাছাড়া, বৃক্ষরোপণের কাজ রয়েছে''।
খাগাড়িয়ার জেলাশাসক অলোক রঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, ''৬ জুলাই পর্যন্ত ১.৬৩৪২৭ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। পরিয়ায়ীদের জন্য় ৩৬ হাজার ৯৮৩ কর্মদিবস তৈরি করা হয়েছে...''।
Read the full story in English