ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত। বিরোধ মেটাতে দু'দেশের কূটনৈতিক আলোচনায় এখন নজর গোটা বিশ্বের। কূটনৈতিকস্তরে আলাপ-আলোচনাতেই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব। বিবিসি হার্ড টকে মাধব বলেছেন, 'কোনও সন্দেহ নেই যে সীমান্তে যা চলছে তা অত্যন্ত গুরুতর। তবে এটাই প্রথম নয়, এর আগেও তিব্বত সীমান্ত সহ একাধিক বার সীমান্ত ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। উভয় দেশের নেতৃত্বই সজাগ। কূটনৈতিকস্তরে সমাধানের চেষ্টা চলছে।'
লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে চিন সমারাস্ত্র মজুত করছে। সেনার সংখ্যাও বাড়চ্ছে। ভারতও লাদাখ. সিকিম সহ ইন্দো-চিন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বাড়তি সেনা মোতায়েন করছে। ফলে উত্তেজনা কয়েকগুন বেড়েছে। রাম মাধাব জানিয়েছেন, 'এটা সত্য়ি যে ভারত কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না। কিন্তু, সমস্যা সমাধানে চিনা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরিসর রয়েছে।'
'বিরোধ মেটাতে এর আগে বেশ কয়েকবার উভয় দেশের সেনা পর্যায়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। এবার তাই বেজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিকস্তরে আলোচনা চলছে। আসা করা যায় এতেই সমস্যা মিটে যাবে।' সরকারি এক আধিকারিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ কথা জানিয়েছে। তাঁর সংযোজন, 'ডোকালাম পর্বে ১৩ বার কূটনৈতিক পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। দু'তরফের দাবিই সেখানে স্পষ্ট ছিল। কিন্তু, এবার পরিস্থিতি বেশ জটিল। একটি অংশ নিয়ে ভারত চিনের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। এরপর সীমান্তে উত্তেজনা রয়েছে। ডোকালামের সময় এতকিছু হয়নি।'
আরও পড়ুন- ভারত-চিন সীমান্তে পরিস্থিতি ‘স্থিতিশীল’, টানাপোড়েনের আবহে ফের বার্তা বেজিংয়ের
অন্য এক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের সমরাস্ত্র ভারতকে হতবাক করেছিল। তারপর সেখানে বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়। এক আদিকারিকের মতে, কোভিড মহামারীর জন্য লাদাখের ওই অংশে ডিভিশন লেভেল ট্রেনিং হয়নি। ২০১৪ থেকে গরমে লাদাখের ওই অংশে সেনার প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। ফলে চিনকে মোকাবিলায় বাড়তি বাহিনীও থাকে সেখানে। কিন্তু এবার তা হয়নি বললেই চলে।
তবে, আলাপ-আলোচনার কথা বলা হলেও বাস্তবে ইন্দো-চিন সীমান্তের পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শক্তি বাড়াচ্ছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর থেকে ভারতও একই কাজ করছে। প্যাংগং সীমান্তে নৌ সেনার হাই স্পীড বোট আনা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌ বাহিনীকে। দু'সপ্তাহ আগে হ্রদে চিন তাদের নৌবহর বাড়িয়েছে জানার পরই এই পদক্ষেপ করেছে ভারত। ইন্দো-চিন উত্তেজনা ঘিরে বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তবে, সেগুলি আসল কিনা তা নিশ্চিৎ হওয়া যায়নি।
এর আগে সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আজ তক-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘ভারত কখনই উত্তেজনা বজায় রাখতে চায় না। সেনা পর্যায়ে আলোচনার প্রয়োজনে হলে তা করতে হবে। দরকার হলে কূনৈতিক পর্যায়েও আলোচনা হতে পারে। কিন্তু, সমস্যার সমাধান প্রয়োজন।’
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন