রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সংকটে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় মেডিকেল পড়ুয়া। এবার অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ায় সেই চিন্তা কিছুটা হলেও কমেছে ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াদের। সোমবার থেকে ইউক্রেনের একাধিক মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। আর তাতেই বেজায় খুশি পড়ুয়ারা।
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ ২০ দিন অতিক্রান্ত। একের পর শহরে হানা দিয়েছে রুশ বাহিনী। অপারেশন গঙ্গা মিশনের অধীনে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে প্রায় সকল ভারতীয় পড়ুয়াকে। দেশে ফিরেই পড়ুয়া-অভিভাবকদের ভবিষ্যত নিয়ে প্রবল উদ্বেগ লক্ষ করা গিয়েছিল। গতকাল থেকে আহতেশাম জাহিদ, লভিভ শহরের ড্যানিলো হ্যালিটস্কি লভিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের এমবিবিএস ছাত্র, যুদ্ধের কারণ এখন উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, “আমরা খুব স্বস্তি পেয়েছি…অন্তত, আমরা সিলেবাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারব। আমরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ যারা যুদ্ধের সময়ও ক্লাস নিচ্ছেন,”।
সেই সঙ্গে তিনি জানান এবার ভবিষ্যত নিয়ে উৎকণ্ঠা অনেকটা কমেছে।"। অপর এক ভারতীয় ছাত্র জাহিদ, অনলাইন ক্লাসে প্রফেসর আন্দ্রি ব্যাজিলেভিচেরের একটি অনলাইন ক্লাসে অংশ নিয়েছিলেন, তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। “আমরা প্রার্থনা করি যে আমাদের শিক্ষকরা যেন নিরাপদে থাকেন, আমরা আশা করি ইউক্রেনে যত তাড়াতাড়ি যুদ্ধ স্বাভাবিক হবে তত তাড়াতাড়ি আমরা ফিরে যাব। আমরা ইউক্রেনকে মিস করছি, সেই সঙ্গে আমাদের কলেজকেও মিস করছি আমরা"। অন্য এক ছাত্র বলেন, "ছোট ছোট দলে ভাগ করে আমাদের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। আজ ১৪ জনের একটি ক্লাস হয়েছে। তাতে আমরা সকলেই যোগ দিয়েছি। আমরা কেউ ক্লাস মিস করতে চাইনা"।
আরো পড়ুন: কেমন পরিস্থিতি ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে, পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানবেন মমতা
এক শিক্ষক বলেন, অনলাইন ক্লাসগুলি সোমবার পশ্চিমের শহরগুলিতে, যেমন লভিভ এবং টারনোপিলের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পুনরায় চালু করেছে। তবে খারকিভের মতো অন্যান্য শহরের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ইন্টারনেট বিভ্রাটের কারণে লগ ইন করতে পারেননি। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, অনেকে শহরেই ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক নয়। তাও আমরা অনলাইন ক্লাস চালু রেখে ছাত্রদের সিলেবাস সম্পর্কে আপডেট রাখার চেষ্টা করছি। তবে কতদিন এভাবে এটা সম্ভব জানিনা। তবে আগামী সেমিস্টার পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসই আমাদের সকলের ভরসা"। সেই সঙ্গে যুদ্ধের কারণে অনেক শিক্ষক দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে"।
নাকোনেছনা সোফিয়া, টারনোপিল ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (টিএনএমইউ) এর ফিজিওলজি বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক বলেছেন, " কোভিডের কারণে আমরা গত একবছর অনলাইনেই ক্লাস নিয়েছি। আমরা অনলাইনে ছাত্র ছাত্রীদের স্টাডি মেটিরিয়াল সরবরাহ করছি। ছাত্রদের মধ্যে সেমিস্টার শেষ করাই এখন প্রধান লক্ষ।" আগের সিন সারারাত বেসমেন্টে কাটিয়ে পরের দিন সকালে ক্লাস নিয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ঘুমিয়েছি কিনা সেটা বড় কথা নয়, ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যত সবকিছুর আগে"।