সৃষ্টি হল ইতিহাস, ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। জামাইয়ের এই বিরাট কৃতিত্বের পর ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির প্রথম প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে। তিনি ঋষি সুনাকের সাফল্য কামনা করে বলেন, “আমরা ঋষিকে নিয়ে গর্বিত এবং তার সাফল্য কামনা করি।' নারায়ন মূর্তি প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'অভিনন্দন ঋষি, আমরা তোমাকে নিয়ে গর্বিত এবং আমরা তোমার সাফল্য কামনা করি। আমরা নিশ্চিত তুমি ব্রিটেনের জনগণের জন্য তোমার সেরাটা দেবে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া তাঁর প্রথম ইমেল প্রতিক্রিয়ায়, মূর্তি বলেছেন, "অভিনন্দন ঋষি। আমরা তোমাকে নিয়ে গর্বিত এবং আমরা তোমার মঙ্গল কামনা করি।"
ফার্মাসিস্ট মা এবং ডাক্তার বাবার ছেলে ঋষি সুনাক। ইংল্যান্ডের উইনচেস্টার স্কুল থেকে পড়াশুনার পর অক্সফোর্ডের লিংকন কলেজ থেকে ২০০১ সালে স্নাতক হন ঋষি। পরে যুক্তরাষ্ট্রে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে এমবিএ নিয়ে পড়াশোনা করেন ঋষি। সেখানেই স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। ২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুতে অক্ষতার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন ঋষি। ২০১৪ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন ঋষি। সে বছর রিচমন্ড থেকে কনজ়ারভেটিভ পার্টির হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন। দম্পতির দুই কন্যা, কৃষ্ণা এবং অনুষ্কা।
আরও পড়ুন : < মার্কিন মুলুকে দিওয়ালি ‘সেলিব্রেশন’, হোয়াইট হাউসে আলোর উৎসবে সামিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট >
ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। তিনি ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। ব্রিটেনের নিয়ম অনুযায়ী, শাসক দলের নেতাই সেদেশের প্রধানমন্ত্রী হন। সুনাক কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ায় ইতিমধ্যেই ইতিহাস তৈরি হয়েছে। এই প্রথম ব্রিটেনের কোনও দল, তা-ও আবার শাসক দলের নেতা নির্বাচিত হলেন এক এশীয় তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। সুনাক প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব নেওয়ার পরও তাই তৈরি হবে আরও একটি নতুন ইতিহাস।
চলতি বছরের মাঝামাঝি একগুচ্ছ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন বরিস জনসন। সেই সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন সুনাক। কিন্তু, তিনি জনসনের পদত্যাগের আগেই সরকারের প্রতি অসন্তোষ জানিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়। সেই ভোটগ্রহণে প্রায় সমানে টক্কর দিয়েও শেষ পর্যন্ত লিজ ট্রাসের কাছে হেরে যান ঋষি সুনাক। কিন্তু, মাস দেড় মাস ক্ষমতায় থাকার পর গত বৃহস্পতিবারই সরকারের ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করেছেন ট্রাস। এরপরই ফের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচনের প্রশ্ন আসে
সুনাক ফের দলের নেতা হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিভিন্ন মহল থেকে শোনা গিয়েছিল বরিস জনসন ফের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কিন্তু, জনসন রবিবার রাতেই জানিয়ে দেন যে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এরপর অপর সম্ভাব্য প্রার্থী মিজ মর্ডান্টও সোমবার বেলা দুটোয় প্রার্থীপদ ঘোষণার সর্বোচ্চ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর জানিয়ে দেন যে তিনিও এই নেতা নির্বাচনের দৌড়ে থাকবেন না। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই আনুষ্ঠানিক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে পারেন ৪২ বছর বয়সি ঋষি সুনাক।