আইনি জটিলতায় সংকটে শিশুদের পছন্দের ম্যাগাজিন চাঁদমামা। জালিয়াতি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগে বিদ্ধ চাঁদমামার ধারক সংস্থা জিওডেসিক লিমিটেড। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার তিন ডিরেক্টরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলাতেই এবার চাঁদমামার বৌদ্ধিক সম্পত্তি (ইন্টেলেকচুয়েল প্রপার্টি রাইটস) বিক্রির নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত মামলার রায় দিতে গিয়ে বম্বে হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, জিওডেসিক লিমিটেডের সম্পত্তি বিক্রির ব্যাপারে নিঃশর্তে সম্মতি জানিয়েছেন সংস্থার ডিরেক্টররা। পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে ওই সংস্থার অধীনস্থ যেসব কোম্পানি রয়েছে, তাও বিক্রির ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন তাঁরা। হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে, বিক্রির আয় ২০০২ সালের পিএমএলএ আইন মোতাবেক ইডির কাছে জমা রাখা হবে। গোটা প্রক্রিয়াটিই আইন মেনেই করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে চাঁদমামার ইন্টেলেকচুয়েল প্রপার্টি রাইটসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন আদালত নিযুক্ত লিকুইডেটর।
আরও পড়ুন, সিবিআই: নাগেশ্বর রাওয়ের নিয়োগ নিয়ে আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
জালিয়াতির অভিযোগে জিওডেসিক সংস্থার তিন ডিরেক্টর কিরণ প্রকাশ কুলকার্নি, প্রশান্ত মুলেকর ও পঙ্কজ শ্রীবাস্তবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি সংস্থার চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেড দীনেশ জাজোদিয়াকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, চাঁদমামার সম্পত্তির বাজারমূল্য ২৫ কোটি টাকারও বেশি। চাঁদমামা ছাড়াও আর্থিক তছরুপের আইনে জিওডেসিক লিমিটেডের ডিরেক্টরদের ১৬ কোটি টাকার সম্পত্তি ‘অ্যাটাচ’ করেছে ইডি।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে তামিল ও তেলুগুতে প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল চাঁদমামা ম্যাগাজিন। চাঁদমামার প্রতিষ্ঠাতা বি নাগী রেড্ডি ও চক্রপানি। পরবর্তী সময়ে নব্বইয়ের দশকে আরও ১৩টি ভাষায় প্রকাশ করা হয় এই জনপ্রিয় ম্যাগাজিন।
২০০৭ সাল নাগাদ চাঁদমামার আর্থিক অবস্থা টালমাটাল ছিল। সেই ধাক্কা সামলাতেই ম্যাগাজিনের অংশীদারিত্ব বিক্রি করা হয় ১০.২ কোটি টাকায়। ২০০৭ সালের মার্চ মাসে চাঁদমামার ৯৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব কিনে নেয় জিওডেসিক। নাগী রাওয়ের ছেলে বি বিশ্বনাথ রেড্ডি ও বিনোদ শেঠির থেকে এই অংশীদারিত্ব কেনে ওই সংস্থা। ২০১৪ সালে জিওডেসিকের সম্পত্তির দখল নেয় হাইকোর্টের লিকুইডেটর। ওই বছরের এপ্রিল মাসে ১৫টি বিদেশি মুদ্রা রূপান্তর সংক্রান্ত বন্ডে প্রায় হাজার কোটি টাকা দিতে পারেনি ওই সংস্থা।
গতবছরের জুলাইয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জানা যায়, চাঁদমামার মুদ্রণ ও ডিজিটাল কপি ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুম্বইয়ে লিকুইডেটরের একটি ওয়ারহাউসে বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে।
ইতিমধ্যেই এ মামলায় জিওডেসিক সংস্থার শীর্ষকর্তাদের নজরে রেখেছে ইডি ও মুম্বই পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং। পাশাপাশি কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগটি খতিয়ে দেখছে আয়কর দফতরও।
Read the full story in English