Advertisment

কাশ্মীরে ৩৭০: কী বলেছিলেন বাজপেয়ী, কেন তাঁকে মনে পড়ল গৃহবন্দি মেহবুবা মুফতির

২০১৮ সালের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, "অটলবিহারী বাজপেয়ীজি আমাদের দেখিয়েছিলেন জম্মু কাশ্মীরের উন্নয়নের রাস্তা, যে পথে আমরা হেঁটে যাব, যে পথ ইনসানিয়ৎ (মানবতা), জামহুরিয়ৎ (গণতন্ত্র), এবং কাশ্মীরিয়ৎ (কাশ্মীরের আত্মা)-এর।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Vajpayee, 370 scrapped

ফাইল ছবি

বিজেপি সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করার বেশ কয়েকঘণ্টা আগে জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছিলেন, তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর অভাব বোধ করছেন।

Advertisment

মুফতি এদিন টুইট করে বলেন, "যারা আমাদের নামে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ এনেছিল, তারা আশা করি বুঝতে পেরেছে যে আমাদের আশঙ্কা মিথ্যে ছিল না। নেতারা গৃহবন্দি, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা বন্ধ, ১৪৪ ধারা জারি এসব কোনওভাবেই স্বাভাবিকতা নয়। যারা এ পরিস্থিতি নিয়ে আনন্দ পাচ্ছে, তারা বুঝতে পারছে না ভারত সরকারের একপাক্ষিক সিদ্ধান্তের ব্যাপ্তি কতদূর হতে পারে। বাজপেয়ী বিজেপি নেতা হওয়া সত্ত্বেও কাশ্মীরি মানুষের মনের কথা বুঝতেন এবং তাঁদের ভালোবাসাও অর্জন করেছিলেন। আজ আমরা তাঁর সবচেয়ে বেশি অনুভব করছি।"

আরও পড়ুন, বিশেষ মর্যাদা নিয়ে কী বলেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের শেষ যুবরাজ?

৩৭০ বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর মেহবুবা মুফতি বলেন, "মোদীজি এই ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতালাভ আমাদের আশা জুগিয়েছিল যে তিনি একজন রাষ্ট্রনেতার মত ব্যবহার করে বাজপেয়ীর দেখানো পথ অনুসরণ করবেন এবং জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের কাছে পৌঁছবেন। আস্থার প্রতি চরম বেইমানি।"


মেহবুবা মুফতির একারই এ পরিস্থিতিতে বাজপেয়ীর কথা মনে পড়েনি।

২০১৮ সালের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, "অটলবিহারী বাজপেয়ীজি আমাদের দেখিয়েছিলেন জম্মু কাশ্মীরের উন্নয়নের রাস্তা, যে পথে আমরা হেঁটে যাব, যে পথ ইনসানিয়ৎ (মানবতা), জামহুরিয়ৎ (গণতন্ত্র), এবং কাশ্মীরিয়ৎ (কাশ্মীরের আত্মা)-এর।"

আবার এ বছরেরই এপ্রিল মাসে মোদী এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন "বাজপেয়ীর ইনসানিয়ৎ, কাশ্মীরিয়ৎ ও জামহুরিয়তের ফর্মুলাই কাশ্মীরের উন্নয়নের একমাত্র ফর্মুলা। কিন্তু কয়েকটি  পরিবার (আবদুল্লা ও মুফতি) কাশ্মীরে এক ভাষায় কথা বলে, দিল্লিতে কথা বলে আরেক ভাষায়। আমি এই দুমুখোদের মুখোশ খুলে দিচ্ছি। যদি ওদের ক্ষমতা থাকে তাহলে ওরা এই দুমুখো নীতি বন্ধ করুক।"

আরও পড়ুন, ৩৭০: শত্রুদের পাশে পেল বিজেপি, হাত ছাড়ল বন্ধু দল

সম্ভবত এই পরিপ্রেক্ষিতেই মেহবুবা মুফতি বলেছেন কাশ্মীরে বাজপেয়ীর অভাব অনুভূত হচ্ছে।

কেন্দ্রের জম্মু কাশ্মীর সম্পর্কিত যে কোনও সিদ্ধান্ত সেখানকার মানুষকে সঙ্গে নিয়েই গ্রহণ করার পক্ষে ছিলেন বাজপেয়ী। ২০০৩ সালে সংসদে তাঁর বিখ্যাত ইনসানিয়ৎ, জামহুরিয়ৎ এবং কাশ্মীরিয়তের কথা বলার সময়ে তিনি বলেছিলেন "বন্দুক কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে না, ভ্রাতৃত্ব পারে"। তিনি বলেন "দিল্লির দরজা কখনও কাশ্মীরিদের জন্য বন্ধ হবে না।"

"আমি জনসভায় কাশ্মীরের মানুষকে ব্যাপক সংখ্যায় বিধানসভা ভোটে অংশগ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। তাঁরা বুলেটের ভয় অগ্রাহ্য করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। আমি ওঁদের আশ্বাস দিয়েছি, আমরা এসেছি আমনাদের ব্যথা ওন্ত্রণা ভাগ করে নিতে। যে অভিযোগই থাকুক না কেন, সবাই মিলে তার সমাধানের চেষ্টা করুন। দিল্লির দরজায় কড়া নাড়ুন। দিল্লি কখনও আপনাদের জন্য দরজা বন্ধ করবে না। আমাদের হৃদয়ের দরজা আপনাদের জন্য চিরকাল খোলা থাকবে।"

"আমি জম্মু-কাশ্মীরের মানুষদের আশ্বাস দিচ্ছি যে আপনাদের সমস্যা আমরা সমাধান করতে চাই- আভ্যন্তরীণ ভাবে এবং বাইরের দিক থেকেও। আমি জোর দিয়ে বলেছি বন্দুক কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, ভ্রাতৃত্ব পারবে। সমস্যার সমাধান করা যাবে ইনসানিয়ৎ (মানবতা), জামহুরিয়ৎ (গণতন্ত্র), এবং কাশ্মীরিয়ৎ (হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব কাশ্মীরের বহু প্রাচীন উত্তরাধিকার)-এর মাধ্যমে।"

jammu and kashmir Atal Bihari Vajpayee Article 370
Advertisment