জেট এয়ারওয়েজকে তীব্র আর্থিক সংকট থেকে বাঁচাতে আপতকালীন ঋণ দেওয়া যায় কিনা, সেই নিয়ে অমীমাংসিতই রয়ে গেল সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টরদের মঙ্গলবারের বৈঠক। সেই সঙ্গে দিনভর চলল ১৬৫০০ কর্মীর প্রার্থনা। বিগত বেশকয়েকদিন যাবত সোশাল মিডিয়ায় চলেছে 'জেট এয়ারওয়েজ বাঁচাও' প্রচার। দিনের পর দিন বেতন হচ্ছে না, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে হচ্ছে, তবু রোজ কাজে আসছেন। খুব গরম না থাকলে ক্রিকেট খেলছেন। মোট কথা আশা ছাড়েননি জেট কর্মীরা।
সংস্থার ফিনান্স দফতরের এক ম্যানেজার জানালেন, "কী ঘটছে, সেই সম্পর্কে নিয়মিত খবরাখবর পাচ্ছি আমরা আমাদের ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে। তাই আমরা এখনও আশাবাদী"।
এক দিন আগেই সংস্থার সিইও মেইল করে কর্মীদের জানিয়েছেন ১৫০০ কোটির যে আপতকালীন অনুদান পাওয়ার কথা ছিল, তা এখনও পায়নি সংস্থা। সংস্থায় কর্মরত এক মহিলা জানালেন, "এখনও পর্যন্ত কোনও কর্মীকে ছাটাই করা হয়নি। কিন্তু কর্মীরা নিজেরাই চাকরি ছাড়তে শুরু করেছেন। আমি নিজেও একটা চাকরি খুঁজছি"।
আরও পড়ুন, আকাশে ইতিহাস; দেশের প্রথম মহিলা ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়র হলেন হিনা জয়সওয়াল
জেট এয়ারওয়েজের সঙ্গে দীর্ঘ ১১ বছর যুক্ত থাকা এক পুরুষ একজিকিউটিভ জানিয়েছেন তিনি ভিতরের আলোচনা থেকে আঁচ করছেন পরিষেবা বেশ কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে, এবং কয়েকজন কর্মীকে ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে।
দিল্লির কর্মীরা ১৮ এপ্রিল জন্তর মন্তরের সামনে জমায়েত হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। "আমরা জানিনা, কী করব। পরিষেবা চালু হওয়া দরকার। জেটের প্রত্যেক কর্মী আলাদা আলাদা ভাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানিয়ে রাখছে। আমরা আশা করছি, আমাদের পক্ষেই খুব শিগগির কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে", বললেন সোসাইটি ফর ওয়েলফেয়ার অব ইন্ডিয়ান পাইলটস এর সাধারণ সম্পাদক অঙ্কিত ত্যাগী।
দীর্ঘদিন ধরেই মন্দা চলছে জেট এয়ারওয়েজে। মাথার উপর আট হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা। যে কারণে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) বকেয়া টাকা দিতে পারছে না এই বিমান সংস্থা। এই প্রেক্ষিতেই বিমান সংস্থাকে জ্বালানী সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে আইওসি। দিন দিন অবনতি হচ্ছে অবস্থার। পিটিআই সূত্রে খবর, ঋণের দায়ে জর্জরিত জেট সংস্থা এবার স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে ১৫০০ টাকা অনুদান চাইল।
বিমানচালকদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটরস গিল্ড সংস্থার ২০০০০ কর্মীর চাকরি বাঁচানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছে প্রধানমন্ত্রীকে।
সংস্থার আর্থিক সংকট চূড়ান্ত। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত বন্ধ করা হল ১৩টি আন্তর্জাতিক রুটের বিমান পরিষেবা। সব মিলিয়ে ৫৪টি বিমানের পরিষেবা বাতিল করার কথা মাস খানেক আগেই ঘোষণা করেছে সংস্থা । সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে মুম্বই ও দিল্লি থেকে সাতটি আন্তর্জাতিক রুটের বিমান সংখ্যাও।
Read the full story in English