ঝাড়খন্ডের খুন্টিতে পাঁচ মহিলার গণধর্ষণের ঘটনায় শনিবার তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, অত্যাচার চলাকালীন দুজন মহিলার যৌনাঙ্গে রিভলবার ও কাঠের টুকরো ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং যৌন নিগ্রহের পুরো ঘটনা মোবাইলে রেকর্ড করা হয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, যে স্কুল থেকে মহিলাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে স্কুল ম্যানেজমেন্টের এক প্রতিনিধির সামনে। গোটা ঘটনা চোখের উপর দেখেও তিনি আটকানোর চেষ্টা করেননি বা পুলিশে খবর দেননি। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
মানব পাচার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কোচাংয়ে একটি পথনাটিকা করতে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা পাঁচ মহিলা। পুলিশ জানিয়েছে ধর্ষণের পুরো ঘটনাটাই ছিল পরিকল্পনা মাফিক। এ ঘটনায় পাঠালগড়ি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরাই মূল অভিযুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, যৌন নিগ্রহের এই ভয়ানক ঘটনায় জড়িয়েছে মাওবাদীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএলএফআই)-এর নামও। একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই এলাকার পাঠালগড়ি আন্দোলনের দু নম্বর নেতা জোহান জোনাস টিডু এই অপহরণের ছক কষেছিল। পুলিশের বক্তব্য, প্রতিহিংসার কারণে এবং শিক্ষা দিতেই এই ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ঝাড়খন্ড পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল আর.কে.মালিক জানিয়েছেন, ''ধর্ষণের ঘটনায় দুজন অভিযুক্তকে আমরা ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছি। যে স্কুল থেকে মহিলাদের অপহরণ করা হয়েছিল সেই স্কুলের ফাদারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।'' অপহরণস্থল থেকে আট কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মধ্যে ওই মহিলাদের ধর্ষণ করা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন, CBI Narada scam: তদন্তের দায়িত্বে নয়া আধিকারিক
এ ঘটনায় ধৃত তিনজনকে শনিবারই গ্রেফতার করার পরে আদালতে তোলা হলে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাঁচি থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে কোচাংয়ের সেই স্কুল বন্ধ। মুখে কুলুপ এঁটেছেন গ্রামবাসীরাও। ওই দুই মহিলাকে গোপন জায়গায় রেখে তাদের কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। রাজ্যের মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে ওই নির্যাতিতাদের দেখতে খুন্টি যান।
আর কে মালিক জানিয়েছেন, "পাঠালগড়ি আন্দোলনের নেতা টিডু তার সহযোগীদের বুঝিয়েছিল, পথনাটিকার মাধ্যমে পাঠালগড়ি আন্দোলনের বিরুদ্ধাচরণ করা হচ্ছে। তার কথাতেই অভিযুক্ত ৬ জন ২টি মোটর সাইকেলে চেপে সশস্ত্র অবস্থায় স্কুলে পৌঁছেছিল।
গত কয়েকবছর ধরে কয়েকটি গ্রামে পাঠালগড়ি আন্দোলন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। পাঠালগড়ি মতে, গ্রামসভাই সব আইনের ঊর্ধ্বে। পুলিশ বা ভারত সরকারের আইন সেখানে খাটবে না।