কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার খিরাম শ্রীগুফারাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় একজন পুলিশকর্মী এবং একজন সিভিলিয়ানেরও মৃত্যু হয়েছে। এমাসের শেষে অমরনাথ যাত্রার প্রাক্কালে যাত্রাপথের এত কাছে এই সংঘর্ষকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে ভাবা হচ্ছে। মৃত জঙ্গিদের নাম দাউদ আহমেদ সফি, মাজিদ মনজুর দার, আদিল রহমান ভট এবং মহম্মদ আশরফ ইটু। নিহত পুলিশকর্মী হলেন আশিক হুসেন, এবং মৃত সিভিলিয়ানকে শনাক্ত করা হয়েছে নৌশহর খিরামের মহম্মদ ইউসুফ (৫৩) হিসেবে। ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন সিভিলিয়ান, যাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা সংকটজনক। আপাতত সুরক্ষার স্বার্থে রাজ্যের কয়েক জায়গায় মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডাইরেক্টর জেনারেল (ডিজিপি) শেষপাল বৈদ একটি টুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন, "জঙ্গিরা সম্ভবত ISJK-র অন্তর্ভুক্ত।" ISJK অর্থাৎ Islamic State Jammu & Kashmir, এবং এই প্রথম উচ্চপদস্থ সরকারি মহল থেকে ওই রাজ্যে ইসলামিক স্টেটের উপস্থিতির কথা খোলাখুলিভাবে মেনে নেওয়া হলো। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানানো হয়েছে যে বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে ISJK-র আট থেকে দশজন সদস্য রয়েছে।
আজ ভোরে এলাকায় সেনাবাহিনী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স-এর যৌথ অভিযানের পর গুলি বিনিময় শুরু হয় জঙ্গিদের সঙ্গে। পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, অন্যান্য অভিযানের সঙ্গে এবারের তফাৎ এই যে জঙ্গিরা নিজেদের গোপন আস্তানা ছেড়ে বেরিয়ে এসে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: Shujaat Bukhari killed: সম্ভাব্য জঙ্গি হানার শিকার রাইজিং কাশ্মীরের সম্পাদক
সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী সংঘর্ষে মৃত দাউদ (৩৩), যে ছিল শ্রীনগরের জাইনাকোট এলাকার বাসিন্দা, সম্ভবত গত নভেম্বরে সুরক্ষা বাহিনীর হাতে শ্রীনগরের জাকুরা এলাকায় নিহত মুগিস আহমেদ মিরের সতীর্থ ছিল। সংঘর্ষে একজন পুলিশকর্মীরও মৃত্যু হয়। সেই সময় ইসলামিক স্টেট তাদের আল আমাক নিউজ এজেন্সির মাধ্যমে ঘোষণা করে যে তারা জাকুরায় একজন সুরক্ষা কর্মীকে হত্যা করেছে।
মির নিজের জঙ্গি জীবনের শুরুতে জাকির মুসার আনসার গাজওয়া হিন্দ বা আল কায়দার সদস্য ছিল, এবং মৃত্যুর পর তাকে ইসলামিক স্টেটের কালো পতাকায় মুড়ে কবর দেওয়া হয়। কিন্তু তখন আরও অনেকগুলি জঙ্গিগোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃত পুলিশকর্মীর হত্যার দাবি জানানোয় মিরের ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগ আছে কিনা তা নিয়ে ধন্দে ছিল পুলিশ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আল আমাক দাবি করে যে ইসলামিক স্টেট পরিচালিত হামলায় হুরিয়ত নেতা ফজল হক কুরেশির বাড়িতে পাহারা-রত এক পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়, এবং জঙ্গিরা তার বন্দুকটি নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়।