জেএনইউ-তে দেশদ্রোহিতার মামলায় নয়া তথ্য সামনে এল। দিল্লি পুলিশের পেশ করা চার্জশিটে যে ৭৭ জন সাক্ষীর নাম উল্লেখ করা রয়েছে, তার মধ্যে ১৪ জন জেএনইউ পড়ুয়াই এবিভিপি-র। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ১৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে ১২ জন এবিভিপির সদস্য, বাকি ২ জন ওই সংগঠনের সহনাভূতিশীল। অন্যদিকে, ৭৭ জনের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন পুলিশ কর্মী ও ৪ জন জি নিউজের কর্মী। এছাড়াও কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের নিরাপত্তা কর্মী ও অন্য আধিকারিকদের নামও সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে।
জেএনইউ-তে দেশদ্রোহিতার মামলায় দিল্লি পুলিশের পেশ করা চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে রয়েছে ১৪ জন জেএনইউ পড়ুয়ার নাম। ওই ১৪ জনই এবিভিপি-র বলে উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। ওই ১৪ জন পড়ুয়া হলেন সন্দীপ কুমার সিং, অখিলেশ পাঠক, ওঙ্কার শ্রীবাস্তব, অলোক কুমার সিং, সৌরভ শর্মা, অঙ্কুর আরিয়ান, ভাস্কর জ্যোতি, প্রিয়দর্শী, অনিমা সোনকার, সুকান্ত আর্য, বিনিত লাল, শ্রুতি অগ্নিহোত্রী, রাম নয়ন বর্মা, আনন্দ কুমার।
আরও পড়ুন, দেশদ্রোহিতা মামলায় চার্জশিটে কানহাইয়া কুমারের নাম
ওই ১৪ জন পড়ুয়া কে? জেনে নিন একনজরে...
সন্দীপ কুমার সিং- জেএনইউ-র প্রাক্তন ইউনিট সেক্রেটারি(২০১২-১৩)। এবিভিপির ন্যাশনাল এগজিকিউটিভ সদস্য পদে(২০১৩-১৪) ছিলেন সন্দীপ। ২০১২ সালে জেএনইউ ছাত্র সংসদের ভোটে সাধারণ সম্পাদকের পদের জন্য লড়েছিলেন। যদিও তিনি হেরে যান।
অখিলেশ পাঠক- সদস্য না হলেও এবিভিপি সমর্থক অখিলেশ। গত বছর জেএনইউ ছাত্র সংসদের ভোট গণনায় গোলমালে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি।
ওঙ্কার শ্রীবাস্তব- এবিভিপির একজন এগজিকিউটিভ সদস্য ইনি। ২০১৪-১৫ সালে জেএনইউ ইউনিটের জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন। ২০১৬-১৭ সালে ছিলেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেএনইউ ছাত্র সংসদের ভোটের পর বাম কর্মীদের হাতে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ওঙ্কার।
অলোক কুমার সিং- এবিভিপির গবেষণা শাখার জাতীয় আহ্বায়ক পদে রয়েছেন অলোক। ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুরারির সেই অনুষ্ঠানের সময় এবিভিপির জেএনইউ ইউনিট প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কিন্তু হেরে যান।
সৌরভ শর্মা- ইনিও এবিভিপির সদস্য। জেএনইউ ছাত্র সংসদের জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে ছিলেন সৌরভ। বর্তমানে এবিভিপির কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তিনি।
অঙ্কুর আরিয়ান- ২০১৬-১৮ সাল পর্যন্ত জেএনইউ-তে এবিভিপির অফিস সেক্রেটারি পদে ছিলেন। ২০১৬ সালে স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ(এসআইএস) থেকে কাউন্সিলর পদে লড়েছিলেন।
ভাস্কর জ্যোতি- ২০১৬-১৭ সালে এবিভিপির এসআইএস শাখার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৭-১৮ সালে জেএনইউ শাখার এবিভিপির এগজিকিউটিভ সদস্য পদে ছিলেন। ২০১৫ সালে এসআইএস থেকে কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একটি ভিডিওতে কয়েকজনকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল। সেই ভিডিওতে জ্যোতি ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। এবিভিপির তরফে দাবি করা হয়েছিল, সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এমন ভিডিও করা হয়েছিল।
প্রিয়দর্শী- ২০১৪-১৫ সালে এবিভিপির জেএনইউ শাখার জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে ছিলেন। ২০১৪ সালে এসআইএস থেকে কাউন্সিলর হিসেবে লড়েছিলেন। জেএনইউ ছাত্র সংসদের নির্বাচনের পর বাম কর্মীদের হাতে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন।
অনিমা সোনকার- বর্তমানে এবিভিপির দিল্লি শাখার জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। ২০১৫-১৬ সালে জেএনইউ শাখার এবিভিপির জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে ছিলেন। ২০১৬-১৮ সালে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে। ২০১৬ সালে এসআইএস থেকে কাউন্সিলর হিসেবে লড়েছিলেন।
আরও পড়ুন, ‘পরিকল্পিত বিতর্ক’, জেএনইউ কাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি দুই প্রাক্তন এবিভিপি সদস্যের
সুকান্ত আর্য- ২০১৬-১৮ সালে জেএনইউতে এবিভিপির জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে ছিলেন।
বিনিত লাল- ২০১৩-১৪ সালে জেএনইউতে এবিভিপির ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
শ্রুতি অগ্নিহোত্রী- ওই বিতর্কিত ভিডিওতে জ্যোতির সঙ্গে শ্রুতিকেও দেখা গিয়েছিল বলে দাবি উঠেছিল। ২০১৭-১৮ সাল এগজিকিউটিভ সদস্য ছিলেন তিনি। গত বছর নির্বাচনের পর বাম কর্মীদের হাতে তিনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন শ্রুতি। ২০১৬ সাল ও ১০১৮ সালে এসআইএল অ্যান্ড সিএস থেকে কাউন্সিলর হিসেবে লড়েছিলেন।
রাম নয়ন ভার্মা- ভোটে না লড়লেও এবিভিপির সদস্য ইনি। বর্তমানে স্কুল অফ কম্পিউটেশনাল অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ সায়েন্সেসের(এসসিআইএস) কাউন্সিলর পদে রয়েছেন।
আনন্দ কুমার- এবিভিপি সদস্য নন ইনি। তবে তিনি এবিভিপি সমর্থক বলে জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে।
Read the full story in English