শনিবার জম্মু কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ে প্রাণ হারিয়েছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-এ-মহম্মদের এক শীর্ষ নেতা। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে আরেক জঙ্গিও। জম্মু কাশ্মীর পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই জইশ নেতার নাম মুন্না লাহোরি। পাকিস্তানের বাসিন্দা মুন্নার বিশেষত্ব ছিল আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরি করা। পুলিশের দাবি, "কাশ্মীরে ধারাবাহিকভাবে নাগরিক হত্যার" নেপথ্যে ছিল মুন্না লাহোরি।
এছাড়াও তাকে ব্যবহার করা হয় ওই অঞ্চলে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে।
দ্বিতীয় নিহত জঙ্গিও জইশ-এ-মহম্মদের সদস্য। রাতভর সেনাবাহিনীর সশস্ত্র অভিযানের জেরে দুজনের মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন, "রাতভর অভিযানের পর আজ সকালে দক্ষিণ কাশ্মীরের অন্যতম শীর্ষ জইশ নেতা মুন্না লাহোরি অথবা বিহারি তার স্থানীয় সহযোগী সমেত নিহত হয়েছে।"
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যখাতে ব্যয়, সবার আগে জম্মু-কাশ্মীর ও আসাম
প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনাবাহিনী ও সরকারের উপর নিরন্তর আক্রমণ চালিয়ে যেতে হবে, এ মাসের গোড়ার দিকে কাশ্মীরের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির কাছে এই বার্তা দেয় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহারি। তার মতে, এর ফলে দেশের অর্থনীতি রক্তাক্ত হবে এবং দেশ ভুগতে থাকবে। এ ভিডিও বার্তার কথা জানায় সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর থেকেই আল কায়দার দায়িত্বে রয়েছে জাওয়াহারি। তার কথায়, “আমার মতে কাশ্মীরের মুজাহিদিনদের এখন অন্তত ভারতে একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। ভারতীয় সেনা ও সরকারের উপর নিরন্তর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া, যাতে ভারতীয় অর্থনীতি রক্তাক্ত হয়ে পড়ে এবং ভারতের লোকবল ও সামগ্রীর ক্ষতি হতে থাকে।”
পিটিআই এ ব্যাপারে সরকারি আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে। তাঁদের মতে, একাধিক নিরাপত্তা সংস্থা এই ভিডিও পরীক্ষা করেছে। তাঁরা মনে করেন, উপত্যকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া জঙ্গিদের একত্রিত করার উদ্দেশ্যেই এই ভিডিও। আল কায়দার নিজস্ব টিভি চ্যানেল আস সাহাবে এই ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিও-তে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে যোগাযোগের আরও শক্তিশালী মাধ্যম স্থাপন করতে বলা হয়েছে সন্ত্রাসবাদীদের।
অন্যদিকে, কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শরণাপন্ন হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এহেন দাবি ঘিরে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দেশের নানা মহলে। এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে ট্রাম্পের এই মন্তব্য সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে এমন কোনও আর্জি রাখেন নি মোদী। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার টুইট করে জানান, "মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের কোনও অনুরোধ করেন নি নরেন্দ্র মোদী…।" এদিকে, ট্রাম্পের দাবিকে হাতিয়ার করে আসরে নামে বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি তুলে সংসদে হইচই ফেলে দেন বিরোধীরা।