''শুধুমাত্র উপত্যকাতেই চাকরি খোঁজা উচিত নয় কাশ্মীরিদের, অন্যান্য জায়গাতেও কাজের সুযোগ পেতে তাঁদের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া উচিত'', এমনই মনে করেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা।
কাশ্মীরিদের মানসিকতার বদল প্রয়োজন বলে মনে করেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর। মনোজ সিনহার কথায়, ''কাশ্মীরিদের মধ্যে একটি অদ্ভুত সামাজিক সমস্যা রয়েছে। তাঁরা কাশ্মীরের বাইরে যেতে চান না। বারামুল্লায় একটি টাটা প্রযুক্তি কেন্দ্র আছে। আমি ৫৮ জন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁদের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিক্স-সহ সব কিছুর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যখন আমি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলাম তাঁদের মধ্যে কতজন চাকরি করছে, তাঁরা জানাল মাত্র ৭ জন। আমি ভেবেছিলাম এমন একটি কেন্দ্র চালানোর কি মানে যাতে ৫৮ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জনের চাকরি নিশ্চিত হতে পারে। তবে পড়ুয়রাই আমাকে বলেছে যে তাঁরা কাশ্মীরের বাইরে যেতে রাজি নয়। কাশ্মীরকে এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
এরই পাশাপাশি বান্দিপোরার একই একটি অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করেছেন জম্মু কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। তিনি বলেন, “বান্দিপোরায় জেলাশাসক একটি চাকরি মেলার আয়োজন করেছিলেন। চেন্নাই-ভিত্তিক একটি মোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি সেখানে এসে ১৮ জনকে চাকরির প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে কাজে যোগ দিয়েছেন মাত্র দু'জন। তাই আমি কাশ্মীর বুদ্ধিজীবীদের অনুরোধ করতে চাই যে কাশ্মীরে আরও সুযোগ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি করা হচ্ছে। তবে আমাদেরও বাইরে যেতে হবে এবং চাকরির সুযোগগুলির সন্ধান করতে হবে।”
আরও পড়ুন- ‘কোর্স শেষ করতেই হবে’, মৃত্যুভয় উড়িয়েই ইউক্রেন আঁকড়ে ভারতীয় পড়ুয়ারা
জম্মু কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পর থেকে এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নে আরও বেশি নজর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার আমলে উপত্যকায় ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। কমপক্ষে চারটি কর্পোরেট সংস্থা উপত্যকায় তঁদের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি করছে। সেই ইউনিটগুলিতে হাজার-হাজার বেকার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। এর আগে, ২০১৯-এর আগস্টে ধারা ৩৭০ বাতিলের পরে তৎকালীন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক ঘোষণা করেছিলেন যে প্রশাসন ৫০ হাজার যুবককে সরকারি চাকরি দেবে।
কাশ্মীর সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মনোজ সিনহা। এক্ষেত্রে বিদেশি মিডিয়াগুলির একাংশকে দায়ী করেছেন তিনি। এপ্রসঙ্গে জম্মু কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর বলেন, “পশ্চিমী মিডিয়ার একটি বড় অংশ কাশ্মীর সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। তাঁরা গণতন্ত্রের কথা বলছে, কিন্তু এই ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের অবদান পাকিস্তানের চেয়েও বেশি।”