আজকের দিনটার জন্য়ই অপেক্ষা করেছিলেন দেবী ও গোকুল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁদের চার হাত এক হতে হতেও হল না। না, তাঁদের কোনও বিচ্ছেদ হয়নি। বরং তাঁদের চার হাত এক হওয়ার বদলে তাঁরা যে দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন, তাতে তাঁদের ঝুলিতে দু'হাত ভরে আশীর্বাদের সংখ্য়া বাড়বে বইকি কমবে না।
ব্য়াপারটা কী? কেরালার কান্নুরে নিজের বাড়িতে মেয়ের বাগদান পর্ব ঘটা করে সারবেন বলে জোরকদমে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন পেশায় সাংবাদিক পি এম মনোজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আনন্দে জল ঢেলে দিল বৃষ্টি, যে এই মুহূর্তে দক্ষিণের ওই রাজ্য়ের ভিলেন। ভয়াবহ বন্য়ায় কার্যত জলের তলায় কেরালা। এহেন দুর্দশায় মেয়ের বাগদান পর্বে তাই দাঁড়ি টানলেন সে রাজ্য়ে সিপিআইএমের মুখপত্র দেশভিমানির রেসিডেন্ট এডিটর। মেয়ের বাগদান স্থগিত করে দিলেন মনোজ। শুধু তাই নয়, মেয়ের বাগদানের জন্য় যে গচ্ছিত টাকা তাঁর হাতে ছিল, সেই টাকাই রাজ্য়ের বন্য়া দুর্গতদের জন্য় খরচ করার সিদ্ধান্ত নিলেন ওই সাংবাদিক। শুধু মনোজই নন, তাঁর মেয়ে দেবীর হবু শ্বশুরবাড়িও তাঁর বাবার মতোই এই সিদ্ধান্তে দু'হাত তুলে সমর্থন করেছে। হ্য়াঁ, গোকুলের পরিবারও এই বাগদানের জন্য় যে টাকা খরচ করতে চেয়েছিল, সেই টাকাও দান করা হচ্ছে মুখ্য়মন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে।
তাঁর এই উদ্যোগকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করছেন সবাই। ফেসবুক পোস্টে মনোজ লেখেন যে, কেরালায় এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে বাগদানের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও লিখেছেন যে, আমাদের দুই পরিবারই বাগদানের অনুষ্ঠানের টাকা দুর্গতদের সাহায্য়ের জন্য় অনুদান হিসেবে খরচ করতে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন, কেরালায় বানভাসি শিশুকে উদ্ধার করে হিরো নৌবাহিনীর কর্মী
এদিকে ভয়াবহ বন্য়ায় কেরালায় মৃতের সংখ্য়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য়ে বন্য়ায় মৃতের সংখ্য়া ৩০০ ছাড়িয়েছে। গতকালই মুখ্য়মন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে কেরালার বন্য়া পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বহু মানুষ ঘরছাড়া, লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে। বন্য়ার জেরে রাজ্য়ে ফসলের ব্য়াপক ক্ষতি হয়েছে।