তখন করোনায় কাবু চিন। করোনার নাম শুনলেই বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক গ্রাস করছে। করোনা যে মারণ ভাইরাসে ততদিনে ক্রমশ তা স্পষ্ট হচ্ছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি ভারতে কেরালায় প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। করোনার সংক্রমিত হন চিনের হুয়ান ফেরত এক ডাক্তারির ছাত্রী। তাঁকে ঘিরে তখন আতঙ্কের প্রহর গোনার শুরু। ওই ছাত্রীর থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়বে গোটা দেশে- এই প্রমাদ গোনা তুঙ্গে ওঠে।
কেরালার কোদুংগাল্লুরের ওই বাসিন্দা ডাক্তারির ছাত্রী অবশ্য ত্রিসূর মেডিক্যাল কলেজে চিকিথ চলেছিল। পরে সুস্থ হয়ে যায় সে। কিন্তু, ফের করোনার কবলে ওই ছাত্রী। সম্প্রতি ২০ বছর বয়সী ওই ডাক্তারির ছাত্রী দিল্লি যাচ্ছিলেন। সেই সময় রুটিন কোভিড পরীক্ষা হয় তাঁর। সেখানেই রিপোর্ট পজেটিভ ধরা পড়েছে। সরকারি কর্মী মারফত জানা গিয়েছে, পজিটিভ হলেও এবার তাঁর শরীরে কোনও উপসর্গ নেই। আপাতত বাড়িতেই রয়েছেন ওই ছাত্রী।
আরও পড়ুন- কোভিডের একটি ডোজে ‘ভুয়ো সুরক্ষা’ তৈরি হচ্ছে দেহে!
করোনা সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। দেশজুড়ে চলছে বিনামূল্যে টিকাদান। দেশবাসীকে দ্রুত টিকা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু, জানা গিয়েছে ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্ত ওই মেডিক্যালের ছাত্রী এখনও টিকা নেননি। এর কারণ অবশ্য এখন অজানা।
আরও পড়ুন- ‘তৃতীয় ঢেউ আসছেই! বেড়ানো-তীর্থযাত্রা বন্ধ করুন’, নাগরিকদের সতর্কবার্তা চিকিৎসক সংগঠনের
ভারতে আছড়ে পরার অপেক্ষায় কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। সেই সঙ্গেই চিন্তা বাড়াচ্ছে ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস, বিটা, গামা ভ্যারিয়ান্টও। কোভিডবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সতর্ক রয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু, করোনাবিধি শিথিল হতেই একাধিক পর্যটনস্থলে পর্যটকদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব দেখা গিয়েছে। বাড়ছে চিন্তা। উদ্বেগ প্রকাশ করে চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ জানিয়েছে, ‘গোটা বিশ্বের পরিস্থিতি এবং অতিমারির ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যাবে, কোভিডের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। কেউ তা আটকাতে পারবে না। এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন ছবি উঠে এসেছে, দেখা যাচ্ছে, কোভিড বিধি না মেনেই রাস্তাঘাটে বেরিয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। সে ব্যাপারে কোনও রকম সরকারি পদক্ষেপ নেই।’। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদীও জানিয়েছেন, 'পর্যটনস্থলে ভিড় চিন্তার বিষয়। আমাদের তৃতীয় ঢেউ রুখতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।'
এর মধ্যেই পুণে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে কোভিডের ভাইরাস প্রজাতির নমুনার জিনোমিক সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে বিশ্লেষণ চলছে। এরপর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একটি বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে ভ্যাকসিনের একটি ডোজে কোনও সুরক্ষা তৈরিই হচ্ছে না। রিপোর্ট অনুসারে, 'ভ্যাকসিনযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগ সংক্রমণ ভ্যাকসিনের এক ডোজ পরে ঘটে। ভ্যাকসিনের একটি ডোজ মানুষকে ভুয়ো সুরক্ষা দিচ্ছে। তারা দেহের প্রাথমিক অনাক্রমতা কমিয়ে দেয়। দুটি ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই সপ্তাহ পরেই কিছুটা অনাক্রম্যতা থাকে মাত্র। তাই এক্ষেত্রে আরও সজাগ হওয়ার দরকার রয়েছে বলেই জানান হয়েছে।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন