শবরীমালা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি নিয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ রায় দেয়, কেরালার শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন সব বয়সের মহিলারা। ঐতিহাসিক এই রায় নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল রায়ের পর থেকেই। আয়াপ্পা ডিভোটিজ অ্যাসোসিয়েশন-এর পাশাপাশি নাইয়ার সোসাইটি এবং দিল্লির চেতনা কনশিয়েন্স অব উইমেন-এর পক্ষ থেকেও রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়। তাদের মতে, শীর্ষ আদালতের রায় “অসমর্থনযোগ্য এবং বিরক্তিকর”। শুক্রবার নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত কন্দ্রারু রাজীভারু। তিনি জানিয়েছেন, ১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলাদের যদি মন্দিরের ১৮ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে ওপরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় তবে মন্দিরে তালা মেরে তার চাবি তিনি মন্দির পরিচালন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবেন।
পুরোহিত রাজীভারু আরও জানিয়েছেন, পন্ডলম রাজ পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি ভক্তদের সঙ্গে আছি। তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না। এর বেশি আর কিছুই আমার বলার নেই।"
পুলিশি নিরাপত্তা নিয়েই শুক্রবার দুই মহিলা মন্দির চত্বরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন। এঁদের মধ্যে এক মহিলার বাড়িতে তার পরপরই হামলা চালানো হয়। প্রধান পুরোহিত পুলিশের আইজিকেও জানিয়ে দেন তাঁর সিদ্ধান্তের কথা। মোটমাট, শবরীমালার কেন্দ্রস্থলে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: শবরীমালার মন্দির খুলল হিংসাত্মক বিক্ষোভের মধ্যে, আটকানো হল মহিলাদের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার শবরীমালা রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। মঙ্গলবার সেই রায় পুনর্বিবেচনা সংক্রান্ত বিশেষ শুনানির আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সহ আরও দুই বিচারপতি নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ে পুনর্বিবেচনা করা হবে। আয়াপ্পাদের আবেদন নিয়ে খোলাখুলি কোনো শুনানি হবে না।
এতদিন ধরে শবরীমালা মন্দিরে প্রথানুযায়ী ১০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত মহিলাদের প্রবেশাধিকার ছিল না। এর বিরুদ্ধে কেরালা হাইকোর্টে যে আবেদন করা হয়েছিল, তাতে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল যে, কেবলমাত্র তন্ত্রী (পুরোহিত)-ই এই প্রথার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। এর বিরুদ্ধে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের বক্তব্য ছিল, এই প্রথা প্রকৃতিগত ভাবেই বৈষম্যমূলক এবং মহিলাদের প্রার্থনার স্থান বাছাইয়ের অধিকারে হস্তক্ষেপকারী।