শহরের অন্যতম ঐতিহ্যশালী নাম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। বরাত জোরেই মেলে এখানে পড়াশোনার সুযোগ, এতদিন একথাই জানা ছিল প্রত্যেকের। তবে বর্তমান পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। হবু ডাক্তাররা যে চরম অব্যবস্থার মধ্যে রয়েছেন, এ কথা সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে গত কয়েকমাস ধরেই। হস্টেলের ন্যায্য দাবিতে ছাত্রদের দীর্ঘ আন্দোলন, এবং অনশন চলেছে।
এবার বাদ গেলেন না ছাত্রীরও। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রাপ্য হস্টেলের দাবি জানিয়ে অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্রের সঙ্গে দেখা করেন ছাত্রীরা। তাঁদের জন্যও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই আশ্বাস দিয়েছেন অধ্যক্ষ। প্রসঙ্গত, ছাত্রদের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল গত তিন বছর কোনও হস্টেল কাউন্সেলিং হয়নি। আর তারই ফল ভোগ করতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। ফলস্বরূপ বিক্ষোভ, আন্দোলন, অনশন।
আরও পড়ুন: এবার ডেঙ্গির থাবা মেডিক্যাল কলেজে, আক্রান্ত চার পড়ুয়া
মেডিক্যাল কলেজে ও হাসপাতালের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং-এর পেছনেই স্বর্ণময়ী গার্লস হস্টেল। তিন জনের জায়গায় একরকম বাধ্য হয়েই সাত-আট জন থাকেন। তবু কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে থাকার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা দেওয়া হয়নি ছাত্রীদের। উল্লেখ্য, পিজিটি-র ছাত্রীদের বিধুমুখী হস্টেল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অনেক আগেই। কাজেই হিসাব মতো ফাঁকা বিধুমুখী হস্টেলেই থাকার কথা ওই ছাত্রীদের। তবে সে গুড়েও বালি। পড়ুয়াদের অভিযোগ, পুরনোদের থাকার ব্যবস্থা না করেই নতুন বর্ষের ছাত্রীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। ছবিটা আগের মতোই। এভাবে বারংবার কেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে, এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
কিছুদিন আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মেইন বয়েজ হস্টেলের চারজন। যদিও এতে কিছুটা টনক নড়েছে হস্টেল কর্তৃপক্ষের। অল্পবিস্তর সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে মেইন বয়েজ হস্টেলে। ছাত্রদের অভিযোগ, সবটাই প্রাথমিক। ঘরের বেড পরিবর্তন, নতুন ডাস্টবিন আনার কাজ চলছে এখন। কিন্তু যেগুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, যেমন বেহাল সিলিং মেরামত, নোংরা বাথরুম পরিষ্কার, আলো বসানো, এসবের কোনও ব্যবস্থা এখনও হয়নি।
আর যার জন্য এত হইচই, সেই হস্টেল কাউন্সেলিং কিন্তু এখনও অন্ধকারেই। ২৩ জুনের আগে অনশনের দিন গুনেছে ছাত্ররা। এখন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কবে হবে তারই দিন গোনা চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হস্টেল কাউন্সেলিং শুরু করা হবে, অধ্যক্ষ এই আশ্বাস দিলেও ছাত্রদের একাংশের মতে কাউন্সেলিং না হওয়ারই সম্ভবনা বেশি। অন্যদিকে হস্টেল সুপারদের চেয়ারের হাত বদল হয়েছে আবারও। নতুন হস্টেল ভবনের সুপারের দায়িত্ব পেয়েছেন কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক নির্মাল্য মান্না। পার্থপ্রতিম ঘোষকে দেওয়া হয়েছে গিরিবাবু হস্টেলের দায়িত্ব। মেইন বয়েজ হস্টেলের সুপার হয়েছেন সমুদ্র গুপ্ত। যদিও সমস্যার সমাধান এখনও অধরাই।