তেত্রিশ টাকা। বাতিল টিকিট বাবদ তাঁর পাওনা তেত্রিশ টাকার জন্য দু'বছর কঠিন লড়াই করে ভারতীয় রেলের কাছ থেকে অবশেষে টাকা ফেরত পেলেন কোটার এক ইঞ্জিনিয়ার। জিএসটি বাস্তবায়ন করার আগে বাতিল করা হয় টিকিট, তা সত্ত্বেও পরিষেবা কর বসানো হয় বলে অভিযোগ ওই ব্যক্তির। শুধুমাত্র এই অভিযোগের জোরে লাগাতার আরটিআই করে গেছেন তিনি। হাল ছাড়েন নি।
যাত্রীর নাম সুজিত স্বামী। জিএসটি চালু হওয়ার আগে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে কোটা থেকে দিল্লী যাওয়ার গোল্ডেন টেম্পল মেলে টিকিট কাটেন তিনি। যাত্রার দিন ছিল ২ জুলাই, অর্থাৎ নতুন কর প্রক্রিয়া কার্যকর হওয়ার একদিন পর। কিন্তু সেই যাত্রা তিনি করেন নি। বাতিল করে দেন টিকিট। তারপর থেকে টানা দু'বছর রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাদানুবাদ চালিয়ে শেষমেশ ১ মে ৩৫ টাকার কাছাকাছি ফেরত পেলেন সুজিত।
আরও পড়ুন: আরএসিতে টিকিট কাটার সব নিয়ম জানেন তো?
তাঁর কথায়, "টিকিটের দাম ছিল ৭৬৫ টাকা। ওয়েটিং লিস্টে থাকার কারণে বাতিল হয়ে যায় টিকিট। সেসময় আমাকে ফেরত দেওয়া হয় ৬৬৫ টাকা।" কিন্তু বাকি ১০০ টাকা? যার জন্য দু'বছর লেগে থাকত হলো সুজিতকে! সে টাকা আজও ফেরত দেয় নি রেল। নিয়ম অনুযায়ী, বাতিল টিকিটের জন্য ৬৫ টাকা কেটে নেওয়া হয়, কিন্তু সুজিতের কাছ থেকে বাতিলের কারণে ১০০ টাকা কেটে নিয়েছে রেল। কিন্তু কেন ? সে উত্তর জানতে, "২০১৭ সাল থেকে আমি এই মামলাটি চালিয়ে যাচ্ছি, এবং রেল কর্তৃপক্ষ শুধু দিনের পর দিন বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গেছেন," জানাচ্ছেন তিনি।
এবছর ১ মে ৩৩ টাকা ফেরত দেয় রেল। সুজিত জানিয়েছেন, "৩৫ টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আরটিআই করি আমি, কিন্তু সেই আরটিআই দু'বছর ধরে বিভিন্ন বিভাগের কাছে ঘুরপাক খায়। অবশেষে ৩৩ টাকা জমা হয় আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।"
তিনি আরও বলেন, "হয়রানির" জন্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিবর্তে, আইআরসিটিসি ফেরত দেওয়া টাকা থেকে দু'টাকা কেটে নিয়েছে। স্বামী বলেন, "আমি অবশ্যই মামলা চালিয়ে যাব, কারণ আইআরসিটিসি কমার্সিয়াল সার্কুলার নং ৪৯ অনুযায়ী ৩৫ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।"
ঘটনাটা শুনতে যতটা তুচ্ছ, ততটা নাও হতে পারে। কারণ এই অভিজ্ঞতা শুধু সুজিত স্বামীর নয়, জিএসটি চালু হওয়ার আগে প্রায় ৯ লক্ষ যাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। কেটে নেওয়া হয়েছে জিএসটি। যার পরিমাণ প্রায় ৩.৩৪ কোটি টাকা। সুজিতের লড়াইকে দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরে নিয়ে এঁদের মধ্যে আরও কেউ কেউ এগিয়ে আসবেন, সেই ভয়েই কি পিছিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় রেল?
Read the full story in English