Advertisment

'মা-বাবাকে মিথ্যে বলতাম', খারকিভ থেকে ফিরে দুঃস্বপ্নের অভিজ্ঞতা জানালেন পড়ুয়ারা

লাগাতার শেলিংয়ের মধ্যেও প্রাণ হাতে করে খারকিভ থেকে রোমানিয়া বর্ডারে পৌঁছন ৫৭ জন পড়ুয়া।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
No report of Indian students being held hostage in Ukraine Centres rebuttal to Russian claim

ভারতে ফেরার পথে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়ারা।

লাগাতার শেলিং, গুলি-বোমাবর্ষণ। কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে খারকিভ থেকে রোমানিয়ার পথে এগিয়ে চলেছিলেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। সেই বিভীষিকার যাত্রা এখনও ভুলতে পারছেন না পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সকালে দেশে ফিরেছেন প্রথম বর্ষের মেডিক্যাল ছাক্রী শ্বেতা তিরুমালাই কুমারাস্বামী। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কাঁপল তাঁর গলা। বললেন, "খারকিভ থেকে রোমানিয়া বর্ডারে যাওয়ার পথে লাগাতার শেলিং হচ্ছিল। বাবা-মাকে মিথ্যা কথা বলতাম, যাতে চিন্তা না করে।"

Advertisment

গত ১ মার্চ খারকিভে ভারতীয় পড়ুয়া নবীন শেখরাপ্পার মৃত্যু আতঙ্কের সৃষ্টি করে বাকি পড়ুয়াদের মধ্যে। যখন তাঁরা বর্ডারের উদ্দেশে রওনা দিলেন তখনও জানেন না অদৃষ্টে কী লেখা আছে। প্রাণ হাতে করে অনেকে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ির লোকজনকে মিথ্যা কথা বলে পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছন তাঁরা। শ্বেতা বলছেন, "অনেক অনিশ্চয়তা ছিল। দুঃস্বপ্নের মতো ছিল সবকিছু। আমার মনে আছে, ১২ কিমি রাস্তা খারকিভ স্টেশন থেকে পিসোচিন পর্যন্ত আমরা হাতে তিরঙ্গা নিয়ে হেঁটেছি। যাতে কোনও বিপদ না হয়। ১ মার্চ দুপুর তিনটে থেকে হাঁটা শুরু করে সন্ধে সাড়ে সাতটায় গন্তব্যে পৌঁছই।"

"যখন খারকিভ স্টেশনে পৌঁছলাম, তখনও শেলিংয়ের শব্দ পাচ্ছিলাম। কিন্তু গোটা যাত্রাপথে শুধু আমি নই, বাকিরাও মা-বাবাদের চিন্তা দূর করতে মিথ্যা কথা বলে।" আকাশ পাতিল নামে দ্বিতীয় বর্ষের মেডিক্যাল ছাত্র বলছেন, "১ মার্চ নবীন যখন সুপার মার্কেটের বাইরে মারা গেল, আমরা ভয়ে আঁতকে উঠেছিলাম। সেটাই তখন আমাদের ইঙ্গিত দিয়েছিল এবার খারকিভ ছাড়তে হবে। যেভাবেই হোক।"

আরও পড়ুন বিভীষিকার ২ সপ্তাহ, অবশেষে সুমি থেকে দেশে ফিরছে পড়ুয়াদের শেষ দল

তিনি আরও বলেছেন, "সবাই রেল স্টেশনের দিকে এগোতে শুরু করল, আমিও সেই পথ ধরলাম। ইউক্রেন প্রশাসন ওঁদের নাগরিকদের সুবিধা দিচ্ছিল, তাই আমাদের পায়ে হাঁটা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। পিসোচিন পর্যন্ত ১২ কিমি হাঁটি আমরা। এর পর রোমানিয়া বর্ডার পর্যন্ত বাস ধরি, দুই দিনের যাত্রাপথ। যখন বর্ডারে পৌঁছলাম, তখন আমরা স্বস্তির শ্বাস ফেলি। সেখানে একটা হস্টেলে আমাদের রাখা হয় মঙ্গলবার পর্যন্ত। তার পর দেশের বিমান উঠি।" শ্বেতা এবং আকাশ হলেন কর্ণাটকের ৫৭ জন পড়ুয়া দলের মধ্যে পড়েন যাঁরা খারকিভ থেকে ১ মার্চ বেরিয়ে ছিলেন।

Russia-Ukraine Conflict Indian Students in Ukraine Kharkiv Romaniya Border
Advertisment