কাজ নেই। পেটে খাবর নেই। নেই আশ্রয়। দেশজুড়ে জারি লকডাউন। এই অবস্থায় পায়ে হেঁটেই কয়েকশ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বিহার, উত্তরপ্রদেশ বাংলামুখী ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা। যা দেখলে শিউরে উঠতে হয়। কেন্দ্র বা বিভিন্ন রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দুস্থদের সহায়তায় চালু হয়েছে আশ্রয় শিবির। সেখানেই দু'বেলা দেওয়া হচ্ছে খাবার। কিন্তু, বাস্তবে যার খোঁজ বিরল। ফলে করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের প্রস্তুতি ঘিরেই প্রশ্ন উঠছে। কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের অভাব চোখে পড়ছে।
গত রবিবার জনতা কার্ফুর পর ২৪ মার্চ রাত আটটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। জানান ওই রাত থেকেই কার্যকর হবে লকডাউন। তার আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে বন্ধ করে দেওয়া হয় গণপরিবহণ ব্যবস্থা। বন্ধ আন্তর্দেশীয় উড়ান যোগাযোগও। জানানো হয়, অত্যাবশ্যকয়ীক কয়েকটি পরিশেবা চালু থাকবে। পরে সেই ছাড়ের মাত্রা বৃদ্ধি করে কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র মন্ত্রক। গত ২৬-২৭ মার্চ সেই ছাড়ের তালিকা আরও বৃদ্ধি হয়। কেন্দ্রীয় ছাড় নিয়ে রাজ্যগুলিও দিশেহারা।
তাতে অবশ্য সুরাহা কিছুই হয়নি। মাত্র চার ঘন্টার ব্যবধানে লকডাউনের ফলে প্রবল সমস্যা দিন মজুররা। জমানো টাকা গত কয়েকদিনে শেষ হয়েছে। এখন কী হবে? কাজ না থাকায় হাতে টাকা নেই। ন্যূনতম খাবারের জন্য লঙ্গরখানাও চোখে পড়ছে না। রয়েছে পুলিশের চোখৎ রাঙানি। সব মিলিয়ে চরম বিপাকে সমাজের পিছিয়ে থাকা খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
আরও পড়ুন: করোনায় আর্থিক ক্ষতি সবচেয়ে বেশি ভারতেই, বৃদ্ধির হার নামতে পারে ২.৫ শতাংশে
লকডাউন প্রস্তুতি নিয়ে জারি করা যেত বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকেরই এক আধিকারিক। তাঁর কথায়, 'দক্ষিণ আপ্রিকায় তিন দিনের প্রস্তুতি নিয়ে লকডাউন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু, এখানে মাত্র চার ঘন্টা সময় মিলেছে। আর এতেই সমস্যা হচ্ছে। '
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলো করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউনে রাজি হলেও তা বাস্তবায়ণে সমন্বয় রক্ষার অভাব রয়েছে। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, 'লকডাউনের ঘোষণা খুবই দ্রুত হয়েছে। পুলিশও পর্রস্তুতির অভাবে গোছাতে পারেনি পুরো বিষয়টি। তাই এই সমস্যা।'
আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও বলেন, 'এক সপ্তাহের লকডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছিল বেশিরভাগ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো। কিন্তু, ২১ দিন হওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। '
উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি তথা ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশনের পরিচালক প্রকাশ সিংয়ের কথায়, 'এইধরনের বিষয় হবে তা কোরোরই জানা ছিল না। এটা আরও কিছিদিন ধরে চলবে। কোরান ঠেকাতে এটা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ মোকাবিলা ভারত যেকোনও দেশের তুলনায় ভালভাবে করছে।'
Read the full story in English