দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এদিকে বর্ধিত লকডাউনের মেয়াদ আর মাত্র এক সপ্তাহ। এরপর কী হবে? জানা গিয়েছে, ৩ মে-র পর দেশের গ্রিন জোন বাদে বাকি অংশে লকডাউন জারি থাকবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের ভিডিও বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সকল সহমত পোষণ করেছেন। তবে, এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউনের মেয়াদ শেষেই করা হবে।
Advertisment
লকডাউনে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে হটস্পট ও কনটেনমেন্ট জোন বাদে গ্রামীন এলাকায় বেশ কিছু কাজে ছাড় ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু, ৩ মে-র পর সেই ছাড়ের পরিধি করোনামুক্ত জেলাগুলিতে যাতে বাড়ানো হয় তার পক্ষে সওয়াল করেন বেশিরভাগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। করোনা সংক্রমণ রুখতে আপাতত আন্তর্দেশীয় উড়ান, বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার পক্ষেই প্রায় সব রাজ্য।
দেশের অর্থনীতির অবস্থা লকডাউনের জেরে বেহাল। বিভিন্ন সমীক্ষাতেও উঠে এসেছে মন্দার পরিসংখ্যান। সূত্র জানিয়েছে, এদিন প্রধানমন্ত্রীর আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন যে, ভারতীয় অর্থনীতির অবস্থা ভাল, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। ভিডিয়ো বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। করোনা মোকাবিলায় একাধিক আর্থিক সহয়তা বা প্যাকেজের দাবি জানিয়েছে। এদিন বৈঠকে সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কোনও কথা বলেননি।
Advertisment
করোনা রুখতে লকডাউনের উপযোগিতা নিয়েও এদিন বৈঠকে মুখ খুলেছেন মোদী। গৃহবন্দি থাকার ফলে কয়েক হাজার প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে দেশের বিশাল জনসংখ্যা ও আক্রান্তের তুলনা টেনেছেন তিনি। সূত্র মারফত থবর, সময়োচিত সিদ্ধান্তের জন্যই অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত আজ ভাল অবস্থানে রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে, আত্মতুষ্টিতে না ভুগে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
হটস্পট বা কমটেনমেন্ট অঞ্চলে কেন্দ্রীয় গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রীষ্মের পরেই বর্ষা আসবে- তখন কীভাবে সংক্রমণ মোকাবিলা হবে? তা নিয়েও রাজ্যগুলিকে কৌশল নিরুপণের আবেদন জানিয়েছেন মোদী। জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীদের তিনি বলেছেন, 'সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে আমাদের সাহসী ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ করতে হবে।'
বিদেশ থেকে ভারতীয়দের ফেরাতে চাটার্ড বিমান চালানোর দাবি করেছে কেরালা। সে প্রসঙ্গে প্রদানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাইরে যাঁরা রয়েছে তাঁরা কেউ অসহায় অবস্থায় নেই। তবুও বিষয়টি বিবেচনায় রইল। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে এদিন নিরবিচ্ছিন্নভাবে ট্রেন চলাচলের পক্ষেও সওলা করে দক্ষিণী এই রাজ্য।
মেঘালয়, মিজোরাম, পুদুচেরি, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, ওড়িশা, বিহার, গুজরাট ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীরা এদিনের ভিডিও বৈঠকে বক্তব্য পেশের সুযোগ পান। গ্রিন জোন বা করোনার প্রকোপমুক্ত অঞ্চল বাদে বাকি অংশে ৩ মে-র পরও লকডাউন বলবৎ রাখার পক্ষে সুপারিশ করেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কোনরাড সাংমা। আরও একমাস লকডাউন বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। বিহার সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সরঞ্জাম চেয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছে।