দেশে যে হারে করোনার দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে ভ্যাকসিন কবে আনা যাবে ভারতে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে দেশের একাধিক মহল। করোনা টিকা আবিষ্কারের দৌড়ে ভারতে এগিয়ে রয়েছে দুটি সংস্থার ভ্যাকসিন। ভারত বায়োটেকের 'কোভ্যাক্সিন' এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা সেরাম ইনস্টিটিউটের 'কোভিশিল্ড'। কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। এমতাবস্থায় ভারতের সামনে বিকল্প হিসেবে রয়েছে রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন। যদিও দেশের ইমিউনোলজিকাল সংস্থাটির মত রাশিয়া টিকা ব্যবহারের আগে অনেকগুলি প্যারামিটার বিবেচনা করে দেখা উচিত।
তবে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা গামালেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রারম্ভিক পর্যায়ের কথাবার্তা হয়েছে ভারতের। কিন্তু চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারতের পশু ও মানব ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিকাল লিমিটেড রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ভারতে এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে আগ্রহী হয়েছে। সম্প্রতি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, স্পুটনিক ভি-এর সুরক্ষা ও কার্যকারিতা সংক্রান্ত বিস্তৃত তথ্য ভারতকে দিয়েছে রাশিয়ার গবেষণা সংস্থা।
আরও পড়ুন, মস্তিষ্কেও করোনা হানা, ফুসফুসে ছিদ্র তৈরি করছে ভাইরাস
ইন্ডিইয়ান ইমিউনোলজিকালস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা: কে আনন্দ কুমার এই যোগাযোগের খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "আমাদের এখন কথাবার্তা চলছে। প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার পর আমরা এখানে স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়টি নিয়েই ভাবনা চিন্তা চলছে। এই মুহুর্তে আমরা উভয় পক্ষই নিজেদের অবস্থান নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছি। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।" তিনি এও বলেন, ভ্যাকসিনটির সবরকম প্যারামিটার বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন, গ্রাফেন মাস্কেই ১০০ শতাংশ আটকাচ্ছে করোনা ভাইরাস
রাশিয়ার ভ্যাকসিনের বিস্তৃত তথ্য পর্যালোচনা করবেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের থেকে ছাড়পত্র পেলে বিকল্প হিসাবে ভারতে পৃথকভাবে এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা যেতে পারে। স্পুটনিক ভি-এর সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে, রাশিয়া একাধিক দেশে এই ভ্যকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা করেছে। এ প্রসঙ্গে ডা: কে আনন্দ কুমার বলেন, "আমাদের দেখতে হবে প্রযুক্তিটি সফলভাবে আমাদের প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত করা যাচ্ছে কি না এবং আমরা আদৌ তা উৎপাদন করতে পারছি কি না। তারা কী করেছে সেটির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রাখার দিকটি আমরা খুঁজছি। কীভাবে সেখানকার প্রযুক্তি আমাদের সরঞ্জামগুলির সঙ্গে খাপ খায় এবং কী পরিমাণে আমরা এই ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারি সেই দিকটিও বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।"
স্পুটনিক ভি হল হিউম্যান অ্যাডেনোভাইরাল ভেক্টর ভ্যাকসিন যা মূলত সারস কোভ-২ ভাইরাসের বাইরের স্পাইক প্রোটিনের মতো স্পাইক প্রোটিন মানব দেহের কোষগুলি যাতে তৈরি করতে পারে সেই কোড বহন করতে পারে। এর জন্য জিনগতভাবে পরিবর্তিত করোনা ভাইরাস ব্যবহার করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন