'মানুষ মারা যাচ্ছে', এই ভাষাতেই ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সরব হলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাতির মহম্মদ। এই নয়া অইন নিয়ে এখন কার্যত ঘরে বাইরে বেজায় চাপের মুখে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মাঝেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নয়া আইন নিয়ে মুখ খুলে রীতিমতো অস্বস্তি বাড়িয়েছিল আগেই। এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সরব হলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাতির মহম্মদ। তবে মালয়েশিয় প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়া দিল্লি। ভারতের তরফে বলা হয়েছে, এই মন্তব্য 'তথ্যগতভাবে বেঠিক'। পাশাপাশি, অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে।
কুয়ালালামপুর শীর্ষ বৈঠকের শেষে শুক্রবার মিডিয়া সেন্টারে মহাতির মহম্মদ বলেন, "আমার দেখে খুব খারাপ লাগছে যে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে দাবি করা ভারত এখন সে দেশের মুসলিমদের নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে"। তিনি আরও বলেন, "এখন আমরাও যদি তাই করি, আপনারা সকলেই জানেন সে ক্ষেত্রে কী হবে। অশান্তি হবে, স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হবে এবং মানুষকে ভুগতে হবে...এই আইনের জন্য ইতিমধ্যে মানুষ মরতে শুরু করেছে। বিগত প্রায় ৭০ বছর ধরে যখন কোনও সমস্যা ছাড়াই তাঁরা সে দেশে নাগরিক হিসাবে কাটিয়েছেন, তাহলে এখন এমন একটা আইন পাস করারনোর কী দরকার ছিল?" তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে মালয়েশিয়ায় চিনা ও ভারতীয় সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
মহাতির মহম্মদের এই মন্তব্যের পরই গর্জে ওঠে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতি জারি করে নয়া দিল্লির তরফে বলা হয়, "মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফের এমন একটা বিষয়ে মন্তব্য করে বসেছেন যা সম্পূর্ণ রূপে ভারতের অভ্যন্তরীণ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ভারতের কোনও নাগরিকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে না বা কোনও ভারতীয়কে তাঁর নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না...তাই, তাঁর মন্তব্য তথ্যগতভাবে বেঠিক। ফলে আমরা আশা করব, তিনি ভারতের অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন। বিশেষত, বিষয়টি ভাল করে না বুঝে তো একেবারেই কোনও মন্তব্য করবেন না"।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের পরও কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন মহাতির মহম্মদ। গত সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় তিনি বলেছিলেন, ভারত কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করেছে এবং তা দখল করেছে। ওই এলাকা মূলত মুসলিম অধ্যুষিত এবং পাকিস্তান সংশ্লিষ্ট ভূখণ্ডের কর্তৃত্ব দাবি করে থাকে।
Read the full story in English