বিয়ে করেছিলেন ১৬ বছর আগে, কিন্তু শংসাপত্র নেওয়া হয় নি। সেই শংসাপত্রের আবেদন জানানোয় উপদেশ এলো, "ফের বিয়ে করুন!" তাও আবার খোদ রেজিস্ট্রেশন বিভাগ থেকে। সেই মন্তব্যের জেরে গত বৃহস্পতিবার কেরালার রেজিস্ট্রেশন বিভাগের চার আধিকারিককে বরখাস্ত করলেন জনকল্যাণ মন্ত্রী জি সুধাকরণ।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কেরালার কোঝিকোড়ে ৷ সেখানকার মুক্কামের বাসিন্দা পি মধুসূদনন স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় বিয়ে করেন আজ থেকে ১৬ বছর আগে। সেই বিয়ের শংসাপত্র বা সার্টিফিকেটের জন্য সম্প্রতি মুক্কামে উপ-রেজিস্ট্রারের দফতরে আবেদন জানান তিনি। নিতান্তই রুটিন মাফিক আবেদন, যার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা সেই দিনই। কিন্তু মধুসূদননকে এই সামান্য কাজের জন্যও বিস্তর ঘোরাঘুরি করতে হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- সব্যসাচী মামলায় পুর চেয়ারপার্সনকে যুক্ত করার নির্দেশ হাইকোর্টের
সমস্যা এই, যে ১৬ বছর আগের ফাইল-নথিপত্র ঘেঁটে সার্টিফিকেট বের করতে নিতান্তই অনিচ্ছুক ছিলেন ওই আধিকারিকরা। কাজেই মধুসূদননকে ঠাট্টা করেই আরও একবার বিয়ে করার পরামর্শ দেন তাঁরা, এবং বলেন যে এযাত্রা সঙ্গে সঙ্গেই সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন তিনি। নিজের এক বন্ধুকে ঘটনার বিবরণ দেন মধুসূদনন, এবং সেই বন্ধু পরামর্শ দেন, ফেসবুকে সমস্ত ঘটনার বর্ণনা পোস্ট করার। ভাইরাল হয়ে যাওয়া সেই পোস্ট দেখেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন, যার জেরে বরখাস্ত হয়েছেন ওই চার আধিকারিক, যদিও তাঁরা দাবি করেন, "স্রেফ তামাশা" করছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: মাঝসমুদ্রের ঝড়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে তলিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী
মন্ত্রী জি সুধাকরণ জানিয়েছেন, ওই আধিকারিকদের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর কথায়, "উনি ২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে করেন। সম্প্রতি ম্যারেজ সার্টিফিকেটের অ্যাটেস্ট করা কপির প্রয়োজন হয় তাঁর। কিন্তু ওই আধিকারিকরা পুরনো ফাইল ঘাঁটতে রাজি হন নি। উল্টে তাঁকে ঠাট্টা তামাশা করেন এবং একাধিকবার অফিসে আসতে বাধ্য করেন।" সুধাকরণ আরও বলেন, ওই সার্টিফিকেট সেদিনই পেয়ে যাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তিনদিন অপেক্ষা করতে বলা হয় মধুসূদননকে, এবং টিটকিরিও শুনতে হয়।
"সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঁর পোস্ট দেখেই আমি আমার আধিকারিকদের খোঁজ নিতে বলি, এবং জানতে পারি যে ওঁর অভিযোগ সত্যি। সঙ্গে সঙ্গে ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই আমি," বলেন সুধাকরণ। তাঁর মতে, সরকারি ক্ষেত্রে কাজ করার অযোগ্য ওই আধিকারিকরা। "আমরা এই ধরনের আচরণ সহ্য করতে পারি না। আমি আমার অফিসারদের আরও খোঁজ নিতে বলেছি, যে ওই চারজনের বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ আছে কিনা।"
আরও পড়ুন- ক্ষমতা বাড়তে চলেছে এনআইএ-র, লোকসভায় বিল পাশ
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কেরালায় এক প্রবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, এবং অস্বস্তিতে পড়ে সে রাজ্যের বাম সরকার। মে মাসে আত্মঘাতী হন কান্নুর জেলার বাক্কালামের বাসিন্দা সাজন পারায়িল (৪৮)। অভিযোগ, তাঁর জীবনের সমস্ত পুঁজি, প্রায় ১৫ কোটি টাকার বিনিময়ে বানানো অডিটোরিয়ামের লাইসেন্স দিতে রাজি হয় নি আন্তুর পুর প্রশাসন। পারায়িলের স্ত্রী এবং পরিজনদের অভিযোগ, পুর অধিকর্তারা "তুচ্ছ কারণে" সম্পূর্ণ কমপ্লেক্সটি ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়ার পরই আত্মহত্যা করেন পারায়িল।