গত মঙ্গলবার দিল্লির আদালত ২০১২ সালে নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনেরর চার সাজাপ্রাপ্তদের মৃত্যু পরোয়না জারি করেছে। ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় চার অভিযুক্তের ফাঁসি কার্যকর হবে। তিহার জেলে শুরু হয়েছে তোরজোড়। তিহার কর্তৃপক্ষ ফাঁসুড়ে চেয়ে মীরাঠে চিঠি পাঠিয়েছিল। সেই চিঠির প্রেক্ষিতেই উত্তরপ্রদেশের জেল কতৃপক্ষ বেছে নেয় সিন্ধি রাম ওরফে পবন জল্লাদকে (৫২)। দোষীদের ফাঁসি দিয়ে দায়িত্বপূরণের সঙ্গেই ভিন্ন এক কর্তৃব্য পালনও করতে চান পবন। আপাতত তাই পবনের পাখির চোখ ২২ জানুয়ারি।
পবনকে তৈরি থাকতে বলেছে মীরাট জেল কর্তৃপক্ষ। দোষীদের চরম শাস্তি দিতে পারবেন ভেবেই ভাল লাগছে তাঁর। তিনি বলেন, 'কাজের জন্য যে অর্থ পাব তা দিয়ে সহজেই ছোট মেয়ের বিয়ে দিত পারব। জানতে পেরেছি সরকার প্রতি জনের ফাঁসির জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেবে। অর্থাৎ চারজনের জন্য পাবো ১ লক্ষ টাকা। যা দিয়ে মেয়ের বিয়ের পরও ধার দেনাও মেটানো সম্ভব।' জানা গিয়েছে, পাঁচ কন্যার মধ্যে চারজনের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন পবন।
আরও পড়ুন: নির্ভয়াকাণ্ডে চার দোষীরই ফাঁসি ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায়
বংশ পরম্পরায় ফাঁসুড়ের কাজ করে আসছেন পবন জল্লাদরা। ওঁর বাবা মাম্মু সিং ও ঠাকুরদা কাল্লু জল্লাদ ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকারীদের ফাঁসিতে চড়িয়েছিলেন। ১৯৮৯ সালের ৬ জানুয়ারি তিহার জেলে হয় সেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। পবনের কথায়, 'মীরাট জেল কর্তৃপক্ষ আমাকে তৈরি থাকতে বলেছেন। এই কাজের টাকা পেলে আমার শেষ দায়িত্বটা ভাল করে পালন করতে পারব।'
মীরাটের জেস সুপার বিডি সিং দ্য ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'এক দিন অন্তরই পবনের শারীরিক পরীক্ষা করাননো হচ্ছে। ওকে রোজই হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এখনও আমাদের কাছে ওকে তিহারে পাঠানোর কথা বলা হয়নি।আমাদের রাজ্যে সরকারি দু'জন ফাঁসুড়ে রয়েছে। জানতে পেরেছি উত্তরপ্রদেশ থেকে এবার একজনকে ফাঁসির কাজে ডাকা হবে। আমরা সব তৈরি রাখছি। ডাক এলেই আমরা পবনকে দিল্লি পাঠাব।'
নীরাটের লহিয়া নদরের রাম কলোনির বাসিন্দা পবন রাম বর্তমানে সরকারের থেকে মাসিক ৫ হাজার টাকা করে পান। এই পারিশ্রমিক বাড়িয়ে ১৫ হাজার করার দাবি করেছেন তিনি। তবে দিল্লির গণধর্ষণকাণ্ডে দোষীদের শাস্তি দিতে পারবে ভেবেই স্বস্তিতে পবন। তাঁর কথায়, 'ঘৃণ্যতম অপরাধের দোষী, যাদের কাঝে দেশ সোচ্চার হয়েছিল তাদের ফাঁসি দেওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। ওদের বাঁচার কোনও অধিকার নেই।'
Read the full story in English