বাঘ শিকারের জন্য এতদিন ছাগল টোপের কথা জানা গিয়েছিল। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টোপ নামক গল্পটি নেহাৎই আখ্যান, তাও তার প্রেক্ষিত ছিল ভিন্ন সময়ের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য়েই মানুষ টোপ দেওয়া হচ্ছে মানুষমারা চিতা ধরতে।
মাঝ নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত তিনজন মানুষ মেরেছে চিতাবাঘটি। তার আক্রমণে আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। দাহোড় জেলার ধানপুর তালুকের এ চিতা এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বন দফতরের। তাকে ধরতে ৯টি খাঁচা পাতা হয়েছে। তার একটি খাঁচায় বন্ধ হয়ে রয়েছেন বনবিভাগের তিন আধিকারিক। এ ঘটনা যে একেবারেই সৃষ্টিছাড়া, সেকথা স্বীকার করে নিয়েও ভদোদরা সার্কেলের মুখ্য বনপাল এস কে শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘‘কখনও সখনও এ ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করার প্রয়োজন হতেই পারে।’’ চিতা পাকড়ানোর মিশনের দায়িত্বে রয়েছেন শ্রীবাস্তবই।
আরও পড়ুন, বাংলাদেশে ভোটের আগে ত্রিপুরা সীমান্তে কড়া নজর বিএসএফের
শুক্রবার রাতে চার ঘন্টা খাঁচায় কাটিয়েছেন তিন বনকর্মী। তাঁরা যে খাঁচায় বন্ধ ছিলেন সেখান থেকে চিতাটির গতিবিধি দেখা যায় বলে জানা গিয়েছিল। মোট ৯টি খাঁচার অন্য আটটিতে অবশ্য টোপ হিসেবে অন্যান্য জীবজন্তু রাখা ছিল। যে তিনজন খাঁচায় বন্ধ ছিলেন তাঁরা হলেন বনপাহারাদার বিজয় বামানিয়া, ঘুমপাড়ানি তির ছোড়ায় পারদর্শী এক আধিকারিক এবং এক পশু চিকিৎসক। তাঁরা শনিবার সন্ধেয় ফের খাঁচায় ফিরে যান।
শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, খাঁচা যথেষ্ট ভালভাবে তালা দেওয়া থাকছে। এই খাঁচাগুলি আসলে বাঁদর ধরার জন্য ব্যবহারের বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা টোপ হিসেবে ছাগল ব্যবহার করেছিলাম। কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে। এখন ভাল ভাবে বন্ধ করা খাঁচার মধ্যে মানুষ রাখা রয়েছে, যাতে চিতাবাঘ দেখা গেলে অন্যদের সঙ্গে সঙ্গে সাবধান করা যায়।
বনরক্ষী বামানিয়া বলেছেন, একে তিনি তাঁর ‘‘মানুষের জীবন বাঁচানোর কর্তব্যের মধ্যেই’’ ফেলছেন। ‘‘আমাদের প্রথম কাজ হল চিতাটাকে ধরা যাতে আর কোনও মানুষের প্রাণ না যায়। আমরা একটুও ভয় পাইনি। শুক্রবার সন্ধে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমরা খাঁচার মধ্যে ছিলাম। কাছেই খোলা জায়গায় একটা ছাগল বাঁধা ছিল, আর ামাদের হাতে ছিল একটা টর্চ। ছাগলের ডাকের একটা মেশিনও ছিল আমাদের কাছে, যেটা বাজিয়ে আমরা চিতাবাঘটাকে কাছে আনতে পারি। আমাদের চারপাশে শুকনো পাতা ছড়ানো ছিল যাতে আমরা চিতাবাঘ কাছাকাছি এলে তার পায়ের আওয়াজ শুনতে পাই।’’
Read the Full Story in English