নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন (সিএএ) একটি নির্দিষ্ট দেশের নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি দেখাতেই তৈরি করা হয়েছে। এই আইনের নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। বার্ষিক প্রতিবেদনে এবার এমনটাই দাবি করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২০১৯ সালে সিএএ তৈরি হয়েছে। কিন্তু, এখনও তা প্রয়োগ হওয়া বাকি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিএএর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠেছে। দায়ের হয়েছে মামলাও। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস সিএএর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-কে 'কা-কা' বলেও কটাক্ষ করেছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দিতেই সিএএ আইন তৈরি হয়েছে। যদিও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ অনেক প্রতিবাদীই। এখনও পর্যন্ত দেশজুড়ে সিএএর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এই আইনে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেওয়া থেকে কার্যত বঞ্চিত রাখার কথাই বোঝানো হয়েছে। তাই এই আইন ভারতীয় সংবিধানবিরোধী বলেই দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দাবি করল সিএএ, 'একটি সহানুভূতিশীল এবং উন্নত আইন।' শুধু তাই নয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সিএএ ভারতীয় নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই কোনওভাবেই একে অধিকার হরণের পর্যায়ে ফেলা যায় না।
আরও পড়ুন- সরকার কিন্তু আরএসএস-ভিএইচপি না, রাম সেনার প্রধানকে শাসালেন বিজেপি নেতা
শুধু তাই নয়, ১৯৫৫ সালে তৈরি নাগরিকত্ব আইনকে এই আইন ভঙ্গ করেনি। তার অবস্থানকে বদলায়নি। পাশাপাশি, বিদেশিদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়াকে নিশ্চিত করেছে বলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি। তাই, সিএএর মাধ্যমে যে কোনও দেশ থেকে যে কোনও ধর্মের শরণার্থীরা যোগ্যতার শর্তাবলী পূরণ করলেই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে বলে স্বরাষ্ট্র্ মন্ত্রক জানিয়েছে।
দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আদিবাসীদের জন্য সংবিধান ষষ্ঠ তপশিলের আওতায় বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। সেকথা মাথায় রেখে সিএএ সংবিধানের ষষ্ঠ তপশিলের আওতায় থাকা এলাকা এবং বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশন, ১৮৭৩-এর অধীনে ইনার লাইন পারমিট সিস্টেমের অধীনে থাকা এলাকাগুলোকে বাদ দিয়েছে বলেই দাবি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
Read story in English