সেরাম ইনস্টিটিউটের চার তলায় কাজ করছিলেন বিপিন সরোজ। বৃহস্পতিবার কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করা সেরামে যখন আগুন লাগে, তিনিই ছিলেন প্রথম সাক্ষী। সকলের প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করে জানিয়েছিলেন, 'ভাগো! আগ লাগি হ্যায়'। এরপর প্রাণ বাঁচাতে সকলেই বাইরে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেন। কিন্তু সকলের প্রাণ বাঁচিয়ে বেরতে পারলেন না বিপিন সরোজ নিজেই।
বৃহস্পতিবার পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ায় ভয়াবহ আগুন লাগে। আগুনের গ্রাসে মৃত্যু হয়েছে বিপিন-সহ আরও চার জনের। আগুনের গ্রাসে পড়ে গোটা ইনস্টিটিউট জুড়ে ছড়ায় তীব্র আতঙ্ক। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। উত্তরপ্রদেশের বিপিন সুরজ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশের রমা শঙ্কর, বিহারের সুশীল কুমার পাণ্ডে এবং পুনের মহেন্দ্র ইংলে এবং প্রতীক পাস্তের মৃত্যু হয়েছে অগ্নিকাণ্ডে।
পুলিশ জানিয়েছে সেরামের যে বিল্ডিংটিতে আগুন লাগে সেটি নতুন তৈরি হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা সকলেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করত। ওই নবনির্মিত বিল্ডিংটিতে বৃহস্পতিবার এয়ার কন্ডিশনিংয়ের কাজ চলছিল বলে জানা গিয়েছে।
চতুর্থ তলায় নয় জন ব্যক্তির মধ্যে সরোজ এবং তার ছোট ভাই অবিনাশ ছিলেন। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ এবং এসি ফিটিংয়ের কাজে নিযুক্ত ছিলেন তাঁরা। ভাইকে হারিয়ে শোকার্ত অবিনাশ বলেন, "আমরা যখন ধোঁয়া লক্ষ্য করি তখন আমরা চতুর্থ তলায় এসির কাজ করছিলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ধোঁয়া এত ঘন হয়ে গেল যে আমরা কিছুই দেখতে পেলাম না। আমরা জানালার দিকে ছুটলাম এবং নীচে তলায় লাফিয়ে পড়লাম। সেখানে ইট-পাথর পড়ে ছিল। খুব আঘাত পেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাইছিলাম। সবাইকে দেখতে পেলেও আমার ভাইকে দেখতে পাচ্ছিলাম। অনেক চিৎকার করেও ওকে পাইনি।"
ঠিক এক মাস আগে, ২২ ডিসেম্বর, বিপিন তার ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতে পুনে এসেছিলেন। মাসে দশ হাজার পাঁচশো টাকা পেতেন বিপিন। পুলিশ ও দমকল বিভাগের অফিসাররা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে পিভিসি, প্লাস্টিক, পাতলা পাতলা কাঠ এবং অ্যাক্রিলিকের মতো জ্বলন্ত পদার্থের উপস্থিতি থাকায় আগুন তীব্র আকার ধারণ করেছিল। নিহতদের দেহ প্রাথমিকভাবে নোবেল হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে ময়না তদন্তের জন্য সাসসুন জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন