Advertisment

কালবুর্গীর হত্যাকারীকে চিহ্নিত করলেন স্ত্রী

৩০ আগস্ট ২০১৫ সালে কর্ণাটকে নিজের বাড়ির সামনে এক আততায়ীর অতর্কিত গুলিতে মৃত্যু হয় কন্নড়ের এই লেখকের। সেই হত্যাকারীকে বুধবার শনাক্তকরণ পরীক্ষায় এবার চিহ্নিত করলেন এম এম কালবুর্গির স্ত্রী উমাদেবী কালবুর্গি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kalburgi, m m kalburgi

মালেশাপ্পা মাধিভালাপ্পা কালবুর্গি. (ফাইল চিত্র)

কন্নড় ভাষার গবেষক, অধ্যাপক, সাহিত্য সমালোচক ও লেখক মালেশাপ্পা মাধিভালাপ্পা কালবুর্গীর হত্যাকারীকে অবশেষে চিহ্নিত করলেন তাঁর স্ত্রী উমাদেবী কালবুর্গী। ৩০ আগস্ট ২০১৫ সালে কর্নাটকে নিজের বাড়ির সামনে এক আততায়ীর অতর্কিত গুলিতে মৃত্যু হয় ৭৭ বছর বয়সী এই লেখকের। সেই হত্যাকারীকে বুধবার শনাক্তকরণ পরীক্ষায় চিহ্নিত করলেন উমাদেবী।

Advertisment

জানা যাচ্ছে, আততায়ী হল বছর সাতাশের গনেশ মিসকিন। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলায় জড়িত দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন এই গণেশ মিসকিন, যাকে চিহ্নিত করে কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। তদন্তে এই তথ্যও উঠে আসে যে এই অভিযুক্ত কর্ণাটকের হিন্দুত্ববাদী দল সনাতন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।

আরও পড়ুন, কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত আন্তর্জাতিক আদালতে

নিহত বাবার কথা স্মরণ করেই পুত্র শ্রীবিজয় কালবুর্গী বলেন, "আমার মা আজ শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। যে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার নাম আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি।"

সূত্রের খবর, কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের তরফে বলা হয়েছে, উমাদেবী যে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছেন, তার নাম গণেশ মিসকিন। কর্নাটকের হুবলি অঞ্চলের এই বাসিন্দাকে গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলায় গ্রেফতারও করা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর লঙ্কেশ হত্যা মামলায় গণেশের নামে চার্জশিট পেশ করে কর্ণাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। অভিযোগ, যে সে এবং গৌরি লঙ্কেশের হত্যাকারী পরশুরাম ওয়াগমোরে (২৬) বাইকে চেপে গৌরীকে হত্যা করার জন্য তাঁর বাড়ি যান। গৌরীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পরশুরাম। কর্ণাটক সিআইডি ২০১৮ সালে কালবুর্গী হত্যা মামলার সঙ্গে লঙ্কেশ হত্যা তদন্তের মিল এবং বেশ কিছু প্রমাণ হাতে পেয়ে গ্রেফতার করে গনেশকে।

প্রসঙ্গত, এই বছরের মার্চ মাসে উমাদেবী সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। তার ভিত্তিতেই গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে ধৃত দুই ব্যক্তিকে কালবুর্গী হত্যা মামলায় নিজেদের হেফাজতে নেয় কর্ণাটক পুলিশের সিআইডি। এমনকি সেই আবেদনে উমাদেবী উল্লেখ করেন যে তাঁর স্বামী এবং গৌরী লঙ্কেশকে একই বন্দুক দিয়ে গুলি করে মারা হয়েছিল।

মে মাসে বিশেষ তদন্তকারী দল কালবুর্গী হত্যা মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে যে গনেশ মিসকিন এবং প্রবীণ প্রকাশ চতুর (২৭) মিলে গুলি করে তাঁকে। হত্যার দিন কালবুর্গীর বাড়িতে বাইকে করে আসে দুই অভিযুক্ত। তারপর দরজা খোলেন উমাদেবী। এম এম কালবুর্গীর সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানানোর পর কালবুর্গী এসে পৌঁছলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গুলি করা হয়, সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার উমাদেবী গনেশ মিসকিনকে সঠিকভাবেই কালবুর্গীর হত্যাকারী হিসেবে সফলভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। যদিও প্রবীণ প্রকাশ চতুরকে ওই বাইকের আরোহী হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।

আরও পড়ুন, ঘরের ছেলের ঘরে না ফেরা পর্যন্ত শান্তি নেই যাদব পরিবারে

পূর্বেই কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল জানায় যে একই বন্দুক ব্যবহার করে লঙ্কেশ এবং কালবুর্গীকে হত্যা করা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, লঙ্কেশ এবং কালবুর্গীকে যে বন্দুক দিয়ে হত্যা করা হয় সেই বন্দুক দিয়ে ২০১৫ সালে মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে বামপন্থী চিন্তাবিদ একাশি বছরের গোবিন্দ পানসারেকেও হত্যা করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, পানসারেকে হত্যা করতে ব্যবহৃত দ্বিতীয় বন্দুকটি দিয়ে ২০১৩ সালে পুণের ৬৯ বছর বয়সী যুক্তিবাদী নরেন্দ্র দাভোলকরকে হত্যা করা হয়েছিল।

সর্বোপরি, লঙ্কেশ হত্যা মামলায় ধৃত অমল কালে (৩৮), বাসুদেব সূর্যবংশী (৩০) এবং গনেশ মিসকিন কালবুর্গী হত্যা মামলাতেও জড়িত ছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারী দল জানায়, "হিন্দুত্ববাদী দল সনাতন সংস্থার সদস্যরা তাঁদের বিশ্বাস এবং মতাদর্শের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কথাবার্তা কেউ বললেই তাঁদের চিহ্নিত করেন।"

Read the full story in English

gauri lankesh Murder
Advertisment