সিএএ বিরোধী আন্দোলনে জেরবার দিল্লি। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ দিল্লি পুলিশ। এই অভিযোগে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএসপি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল আইপিএস চিন্ময় বিশওয়ালকে। নির্দেশিকা জারি করে এই রদবদল করে কমিশন। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির পরবর্তী ডিএসপি হলেন অ্যাডিশনাল ডিএসপির দায়িত্বে থাকা কুমার গণেশ।
৮ই ফেব্রুয়ারি দিল্লির বিধানসভা ভোট। গত ৩১ জানুয়ারি ভোটের নিরাপত্তার নিয়ে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে পুলিশের ভূমিকা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন তোলেন কমিশনের আধিকারিকরা। বিশেষ করে শাহিনবাগ ও জামিয়া গুলিকাণ্ড ঘিরে কমিশনের তোপের মুখে পড়তে হয় দিল্লি পুলিশকে।
কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, 'নির্বাচন কমিশন মনে করছে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি (জামিয়া ও শাহিনবাগ সহ) ভালভাবে মোকাবিলা করা হয়ননি।' পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 'জামিয়ার প্রথম গুলি চলা নিয়ে কমিশন পুলিশকে কড়া প্রশ্ন করে। কমিশন জানায় বেশ কয়েকজন পুলিশের সামনেই দুষ্কৃতী গুলি ছুড়ছে এটা মেনে নেওয়া যায় না।'
গত সপ্তাহে নির্বাচনের প্রচারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ও বিজেপি সাংসদ পারভেশ সাহিব বিতর্কিত মন্তব্য করে। বিরোধী শিবিরের দাবি, উস্কানিমূল ওই বক্তব্যের জেরেই জামিয়ায় গুলি চলেছে। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করল না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কমিশনের আধিকারিকরা। কমিশনের এক অফিসার বলেন, 'ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুশারে অভিযুক্ত হলে যেকোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধেই পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারে। এক্ষেত্রে কমিশনের নির্দেশের প্রয়োজন পড়ে না।' উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে,অনুরাগ ঠাকুর ও বিজেপি সাংসদের ভোট প্রচারেও সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন।
আরও পড়ুন: “আমরা বিরিয়ানি নয়, বুলেট খাওয়াই”, যোগীর মন্তব্য দিল্লিতে কেজরির ধর্না
দিল্লি পুলিশের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। সেখানেই উপস্থিত ডিএসপি চিন্ময় বিশওয়ালের থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানতে চান, শাহিনবাগের অবস্থান আন্দোলন ভোটের কাজে কিভাবে প্রভাব ফেলতে পারে? পরিস্থিতি মোকাবিলায় কি পরিকল্পনা রয়েছে দিল্লি পুলিশের। জবাবে পুলিশের পরিকল্পনার কথা জানান আইপিএস বিশওয়াল। তাঁকে উপযুক্ত সুরক্ষার আয়োজন করতে নির্দেশ দেয় কমিশন।
সিএএ বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভ অব্যাহত। শাহিনবাগ ও জামিয়ায় গুলি চলেছে গত সপ্তাহে। তার আগে গত ১৫ই ডিসেম্বর জামিয়া মিলিয়ায় ঢুকে পড়ুয়াদের হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। সেদিন পুলিশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএসপি বিশওয়াল। পুলিশ অবশ্য দাবি করে, দাঙ্গা রুখতেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছিল।
কমিশনের তরফে রবিবার বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, '২০০৮ সালের আইপিএস চিন্ময় বিশওয়ালকে তাঁর বর্তমান পদ থেকে রেহাই দেওয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট করবেন তিনি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে বর্তমান অ্যাডিশনাল ডিএসপি কুমার গণেশ (দিল্লি, আন্দামান-নিকোবর পুলিশ সার্ভিস ১৯৯৭) ডিএসপির দায়িত্ব নেবেন।' স্থায়ী ডিএসপি-র জন্য পোল প্যানেল দিল্লির পুলিশ কমিশনার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে তিন জনের নাম নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে।
Read the full story in English