বামশাসিত কেরলে ছাত্রী হয়েও মঞ্চে পুরস্কার নিতে আসায় এক দশম শ্রেণির ছাত্রীকে প্রকাশ্যে অপমান করলেন জনৈক মুসলিম মৌলবি। তার নিন্দা করার বদলে কেরলের মুসলিম ধর্মগুরুদের একাংশ তা সমর্থন করল। মুসলিম ধর্মগুরুদের সংগঠন সমস্ত কেরাল জেমিয়াতুল উলেমার সভাপতি সইদ মহম্মদ জিফরি মুথুক্কোয়া থাঙ্গাল এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমাদের ইসলামি আইনের আওতায় থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। এই আইন মানুষের তৈরি না। সরকারি জায়গারও কিছু নিয়মকানুন আছে।'
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, মালাপ্পুরমের এক মাদ্রাসার অনুষ্ঠানে, মুসলিম মৌলবি এমটি আবদুল্লাহ মুসালিয়ার প্রকাশ্যে আয়োজকদের তিরস্কার করেন। আয়োজকদের অপরাধ, তাঁরা একটি মেয়ে, দশম শ্রেণির ছাত্রীকে পুরস্কার নেওয়ার জন্য মঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই অপমান, ঘুরিয়ে কার্যত ওই ছাত্রীকেও করা হয়েছে বলেই উদ্যোক্তাদের অনেকে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, এত কিছুর পরও তাঁরা ওই উলেমার নিন্দা করতে সাহস পাননি। উলটে, তাঁকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না।
আরও পড়ুন- ‘হয়রানির জন্যই মামলা’, ধর্মে আঘাত ইস্যুতে পুলিশের চার্জশিট নিয়ে সরব কুণাল
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কার্যত ওই মুসলিম ধর্মগুরুর পক্ষে সওয়াল করেছেন মুসলিম নেতাদের সংগঠন। মুসলিম ধর্মগুরুদের সংগঠনের নেতা মুথুক্কোয়া থাঙ্গাল এই প্রসঙ্গে বলেন, 'ওই মেয়েটিকে অপমান করার কোনো উদ্দেশ্য আলেমের ছিল না। তিনি এমন একটি পরিস্থিতি এড়াতে চেয়েছিলেন যেখানে মেয়েরা মঞ্চে পা রাখতে লজ্জা বোধ করতে পারে। আলেম যখন মেয়েটির মুখের দিকে তাকান, দেখতে পান যে মেয়েটি অত্যন্ত নার্ভাস। এটা খুবই স্বাভাবিক যে নারীরা পুরুষের মঞ্চে এলে লজ্জাবোধ করে। সেকথা মাথায় রেখে ওই আলেম, পুরস্কার পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা অন্যান্য মেয়েদের জন্য এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা করেন। আর, সেই কারণেই তিনি সংগঠকদের ধমক দিয়েছিলেন।'
যাঁকে ঘিরে এত বিতর্ক, সেই অভিযুক্ত আলেম আবদুল্লাহ মুসালিয়ারের অবশ্য এসব নিয়ে এত রাখঢাক নেই। তিনি নিজের কাজকে সমর্থন করে সরাসরি বলেন, 'ইসলাম কখনও চায় না নারীরা পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা করুক। নারী ও পুরুষের মধ্যে পরদা থাকা উচিত। মহিলারা সবকিছু উপভোগ করতে পারে। সেই পরদার মধ্যে থেকে সবকিছু দেখতে পারে।' অভিযুক্ত আলেম মুসালিয়ার আবার কেরলের মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সমস্ত কেরল সুন্নি বিদ্যাভ্যাসা বোর্ডের একজন প্রবীণ আধিকারিক।
Read story in English