বিবাহিত হিন্দু মহিলার সঙ্গে সফর করছিলেন মুসলিম যুবক। এই অপরাধে দুজনকে জবরদস্তি ট্রেন থেকে স্টেশনে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বজরং দলের বিরুদ্ধে। উজ্জয়নী স্টেশনে আজমেরগামী ট্রেন থেকে দুজনকে নামিয়ে তাঁদের রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয় বজরং দল।
বজরং দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলে মুসলিম যুবককে নিগ্রহ করে এবং জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয় যুগলকে। ইন্দোরের বাসিন্দা দুই বন্ধুকে জিআরপি জেরা করে এবং স্টেশনের থানায় দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখে বলে অভিযোগ। এর পর দুজনের পরিজনরা এলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
তবে বজরং দলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এমনটাই জানিয়েছে জিআরপি। এই ঘটনা গত ১৪ জানুয়ারির। মুসলিম যুবকের নাম আসিফ শেখ। তিনি একটি ছোট ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক। মহিলা একজন স্কুল শিক্ষিকা।
উল্লেখ্য, ট্রেনের সেই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছে, তিনজন বজরং দলের সদস্য আসিফকে টানতে টানতে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিচ্ছেন। তার পর তাঁকে জিআরপি স্টেশনে নিয়ে যান। মহিলাটি তাঁদের পিছনে হেঁটে যাচ্ছিলেন।
থানায় আরও একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে। যাতে দেখা গিয়েছে, ওই মহিলা চিৎকার করে বজরং দলের কর্মীদের বলছেন, "আপনাদের ভুল বোঝাবুঝির জন্য আমার জীবন নষ্ট হয়ে য়াবে। আমি একজন সাবালিকা। স্কুলে শিক্ষকতা করি। আমি শিশুদের পড়াই।" তখন বজরং দলের এক সদস্য পিন্টু কৌশল তাঁকে বলেন, "আপনার সঙ্গে কোনও কথা বলছি না।"
জিআরপি সুপার নিবেদিতা গুপ্তা বলেছেন, "আসিফ এবং ওই মহিলা পারিবারিক বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে চেনেন। তাঁদের যখন বজরং দলের কর্মীরা থানায় নিয়ে আসেন, তাঁদের বিরুদ্ধে লাভ জিহাদের অভিযোগ তোলেন তাঁরা। কিন্তু দুজনের বয়ান রেকর্ড করার হয়। তাঁদের কোনও অপরাধ নেই কারণ তাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক। এর পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।"
আরও পড়ুন Google Meet-এ বিয়ে, খাবার পৌঁছে দেবে Zomato, অভিনব ভাবনা বর্ধমানের যুগলের
তিনি আরও জানিয়েছেন, "বজরং দলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি। আমরা জানতাম না ট্রেনে ওই যুবককে মারধর করা হয়েছে। এবং সে কথা দুজনে কেউ-ই বলেননি। তাই কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় বজরং দলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি।"
এদিকে, মালওয়া প্রান্তের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রচার প্রমুখ কুন্দন চন্দ্রওয়াত বলেছেন, "বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল হিন্দু মহিলাকে ফুঁসলিয়ে আজমের নিয়ে যাচ্ছিলেন মুসলিম যুবক। হিন্দু বোনের সুরক্ষার জন্য আমাদের কর্মীরা হস্তক্ষেপ করে। যখন ওই যুবক উত্তেজিত হয়ে ওঠে তখন তাঁকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে দুপক্ষই সামান্য হাতাহাতি করে। কিন্তু কাউকে মারধর করা হয়নি। পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তাঁরা চলে যান।"