তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউনের বেশ কয়েকদিন অতিক্রান্ত। কিন্তু, দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। অধিকাংশ মেট্রো শহরই রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত। এই পরিস্থিতিতে বড় শহরগুলিতে রাস্তায় নেমে কাজ করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানই এখন প্রশাসনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। শুক্রবার করোনা প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লভ আগারওয়াল সতর্ক করে বলেছেন, 'ভাইরাস নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকা শিখতে হবে।'
এপ্রিলে সংক্রমণের হার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও চলতি মাসের শুরু থেকেই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। ভারতে সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৬ হাজার পেরিয়েছে। সংক্রমণের সংখ্যা আগামী জুন জুলাই মাসে শীর্ষে পৌঁছবে বলে আগেই সতর্ক করেছেন এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলোরিয়া। বর্তমানে ভাইরাস সংক্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার সময়ও কমে গিয়েছে। আগে যেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল ১২ দিনে, ৫ই মে তা কমে হয়েছে ১০ দিন। যা চিন্তা বাড়িয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের 'ভাইরাস নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকা শিখতে হবে' মন্তব্য খুবই তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ভারতে ৩৭,৯১৬ অ্যাকটিভ করোনা পজেটিভ ছিলেন। এর মধ্যে ৩.২ শতাংশের অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছে, ৪.৭ শতাংশ আইসিএউ-তে রয়েছেন এবং ১.১ শতাংশের ভেন্টিলেশন সহায়তার প্রয়োজন।
গ্রামের থেকে শহরে করোনা সংক্রমণের হার বেশি। বিশেষ করে মেট্রো শহরগুলোতে। গ্রামে বা মফস্বলে আশা কর্মী সহ ন্যাশনাল আরবান হেল্থ মিশনের অন্তর্গত স্বাস্থ্যকর্মীরাই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে নজরদারির মূল কাজ করছেন। কিন্তু, মুম্বই, কলকাতা সহ বেশিরভাগ মেট্রো শহরেই এই ধরনের স্বাস্থ্য কর্মীর অভাব রয়েছে। ফলে নজরদারিতেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এছাড়াও, পুর এলাকায় নিকাশী কর্মী বা পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন। এটা সঠিক পন্থা নয়। করোনা রোধে সংক্রমিতকে খুঁজে বার করার পাশাপাশি সেই ব্যক্তির সংস্পর্ষে কে বা কারা এসেছিল তারও খোঁজ চালাতে হবে বলে মত স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিকের।
আরও পড়ুন- রাজ্যে ফিরতে হলে করোনা নেগেটিভ হতে হবে, হাইকোর্টের নির্দেশেই সুপ্রিম সম্মতি
মহারাষ্ট্র, গুজরাট, দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে। এইসব রাজ্যকে কনটেনমেন্ট এলাকা বৃদ্ধি ও সেখানে বিধিনিষেধ কঠোর করার কথা বলা হয়েছে বলে জানান লভ আগারওয়াল।
তবে, মুম্বাই সহ দেশের অন্য়ান্য প্রান্তে এখনও করোনা গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি বলেই দাবি করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তবে, মুম্বাইয়ের বস্তি এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও ঠিকবাবে মানা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা।
এদিকে, করোনা রুখতে প্লাজমা থেরাপির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য় ২১টি হাসপাতালকে অনুমোদন দিয়েছে আইসিএমআর, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে একথাই জানানো হয়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন