আগামী দিনে দেশের সামনে কী কী বিপদ অপেক্ষা করছে, তার ট্রেলার ইতিমধ্যেই দেখে নিয়েছে ভারত। সেই তালিকায় আছে পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অমীমাংসিত সীমান্ত, আছে ছায়াযুদ্ধ। এমন বহুমুখী বিপদের কারণেই দেশের অস্ত্রসম্ভার লাগাতার বাড়াতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে।
নয়াদিল্লির প্রজ্ঞান কনক্লেভে ' সেন্টার ফর ল্যান্ড ওয়ারফেয়ার স্টাডিজ' -এর এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান। অনুষ্ঠানে ছিলেন বায়ু এবং নৌ সেনার প্রধানরাও। অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যেই ভবিষ্যতের সংঘর্ষের ট্রেলার দেখে নিয়েছি। প্রতিদিনই তথ্য ও যোগাযোগ এবং সাইবার ক্ষেত্রে লড়াই চলছে। অমীমাংসিত ও সক্রিয় সীমান্তেও দ্বন্দ্ব আছে। এসব ট্রেলারের ওপর নির্ভর করেই আমরা আগামী যুদ্ধক্ষেত্রগুলো চিনতে পারছি।'
অনুষ্ঠানের আলোচ্য বিষয় ছিল আগামী যুদ্ধ এবং তার প্রস্তুতি। এখানে জেনারেল নারাভানে বলেন, 'মহাকাশ প্রতিরক্ষা সংস্থা তৈরি, সাইবার প্রতিরক্ষা সংস্থা গঠন, সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ বিভাগ তৈরি করা হয়েছে প্রতিরক্ষা সম্পদের সমন্বয় ঘটানো, প্রতিরক্ষা বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে এবং সুসংহত আঞ্চলিক শক্তি হয়ে ওঠার লক্ষ্যেই।'
সেনাপ্রধান জানান, পুনরায় ভারতীয় সেনার কাঠামো নির্মাণ, পুনর্গঠন এবং ভারসাম্য গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এই বদলের পথে সেনাবাহিনী নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছে।
আরও পড়ুন গালওয়ানের আহত চিনা সৈনিক মশালবাহক, বেজিং অলিম্পিক্স বয়কট ভারতের কূটনীতিকের
সম্প্রতি চিন এবং পাকিস্তান হাতে হাত মিলিয়ে ভারতের বিরুদ্ধাচারণ করছে। এই ব্যাপারে সেনাপ্রধান বলেন, 'প্রতিপক্ষ মিলিতভাবে রাজনৈতিক সামরিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কৌশলে লক্ষ্যপূরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০২০ সালে বিভিন্ন সীমান্তে এই চেষ্টার সাক্ষী হয়েছেন দেশবাসী।' বর্তমানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি অব্যাহত। কারণ, দুর্বল ভারত না। যথেষ্ট শক্তি আছে। এই অবস্থান থেকে ভারত বৈঠকে অংশ নিয়েছে। অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যুদ্ধে পারদর্শী জওয়ানরা দেশের উত্তর সীমান্তের পরিস্থিতি সামলেছেন। এর ফলে দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বে আঁচ পড়েনি বলেই সেনাপ্রধান অনুষ্ঠানে জানান।
সেনাপ্রধান জেনারেল নারাভানের সুরেই এয়ার চিফ মার্শাল বিবেক রাম চৌধুরিও যুদ্ধক্ষেত্রের বিস্তার এখন সাইবার, তথ্য ক্ষেত্র এবং মহাকাশে পর্যন্ত পৌঁছেছে বলে জানান। সেকথা মাথায় রেখে আগামী দিনের যুদ্ধ সর্বাত্মক হতে চলেছে বলেই তাঁর ধারণা। নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল রাধাকৃষ্ণন হরি কুমারও বর্তমান বহুমেরুর বিশ্বে সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। আর সেই কারণেই জলপথে বিরূপ প্রতিবেশীদের রুখতে অবিলম্বে ন্যাশনাল মেরিটাইম সিকিউরিটি কোঅর্ডিনেটর পদে নিয়োগ জরুরি বলে তিনি জানান।