ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কমে গেল নির্বাচনী উত্তাপ। পঞ্চম দফার ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের নির্বাচনী প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করলেন।
শুক্রবার সকালেই ওড়িশার বিস্তীর্ণ উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় 'ফণী'। ইতিমধ্যেই তার রেশ পৌঁছে গিয়েছে বাংলা, ঝাড়খণ্ড-সহ পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যে। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে জারি করা হয়েছে উচ্চ সতর্কতা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরের পর 'ফণী' ওড়িশার সীমানা পেরিয়ে মেদিনীপুর হয়ে ঢুকে পড়বে বাংলায়। প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকার একাংশেঅ। সম্ভাব্য বিপর্যয়ের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী আগামী ৪৮ ঘন্টায় তাঁর সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছেন। টুইট করে মমতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার অষ্টপ্রহর পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
নির্বাচনী প্রচার বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। বৃহস্পতিবারেই সম্ভাব্য বিপর্যয় নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন মোদী। আগামী ৫ মে ঝাড়খন্ডের চাইবাসায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা করার কথা ছিল তাঁর। সেই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ফণী'র আগমনে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন দেব, মিমি, স্বস্তিকারা
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে। ওড়িশা সীমান্ত সংলগ্ন শ্রীকাকুলম ও ভিজিয়ানাগ্রাম জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। একাধিক জেলায় ঝড়ের দাপটে গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্য সচিবালয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যে কোনও রকম পরিস্থিতিতে সর্বাত্মক উদ্ধার কাজের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গোটা পূর্ব উপকূল এবং সংলগ্ন এলাকায় আগামী দুদিনে রেল ও বিমান পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার পর্যন্ত কলকাতা-চেন্নাই রুটের অন্তত ২২০টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে হাওড়া-চেন্নাই সেন্ট্রাল করোমণ্ডল এক্সপ্রেস, পাটনা-এরনাকুলম এক্সপ্রেস, নিউ দিল্লি-ভূবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস, হাওড়া-হায়দ্রাবাদ ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর-রামেশ্বরম এক্সপ্রেস।
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে ঝাড়খণ্ডেও। দেশের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, রাজ্যের চারটি জেলা, পূর্ব সিংভূম, সরাইকেল্লা-খারসওয়ান, পশ্চিম সিংভূম এবং দুমকায় ফণীর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে। চাইবাসায় মোদীর পূর্বনির্ধারিত সভা বাতিল হওয়া ছাড়াও রাজ্যের অন্য গুরুত্বপুর্ণ নেতারা শনিবার পর্যন্ত তাঁদের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করেছেন। উত্তর-পুূর্বের আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।